তবে যুক্তরাষ্ট্রের আদি ১৩ কলোনির অন্যতম এ রাজ্য সবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের দিক দিয়ে বেশিরভাগ অঞ্চলের চেয়ে অনেক এগিয়ে। এখানে ৫২ দশমিক ২ শতাংশ বনাঞ্চল আর ২ হাজার ৭৬৫ প্রজাতির প্রাণীর দেখা মেলে।
চলতে ফিরতে খরগোশ, কাঠবিড়ালি, বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস, টার্কি, এমনকি হরিণের প্রাচুর্য একথার প্রমাণ। তবে সেদিন এক বিরল প্রাণীর দর্শন হল বোস্টন পাবলিক গার্ডেনে।
বাসা থেকে পায়ে হেঁটে এলোয়াইফ স্টেশন, সেখান থেকে ট্রেনে পাবলিক গার্ডেন। শুধু যেটুকু পথ মেট্রো ট্রেন পাতাল পথে যায়, তখনই শুধু বিভিন্ন প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতির দেখা মেলে না। বাকিটুকু গাছগাছালি আর পাখপাখালিতে রমরমা।
বোস্টন পাবলিক গার্ডেন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বপ্রথম বোটানিকাল গার্ডেন। এটি এর পার্শ্ববর্তী বোস্টন কমন নামক বিখ্যাত পার্কের প্রায় দুইশ’ বছর পর ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে স্থাপন করা হয়।
আগেই বলেছি যে পশুপাখির প্রাচুর্য বোস্টনে নতুন নয়, এজন্য বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস ও অন্যান্য পাখির চেয়ে দৃষ্টি কাড়ছিল পার্কের স্থাপত্যশৈলী ও ভাস্কর্যগুলো। তবে সব পালটে গেল গাছ বেয়ে এক সাদা ছোট্ট প্রাণীকে নামতে দেখে। মুহূর্তে ভ্রমণকারীদের চোখ (মোবাইলের ক্যামেরা বলাই ভালো) তাক হল সাদা রঙের কাঠবিড়ালির দিকে।
বিভিন্ন রঙের কাঠবিড়ালি আগে দেখেছি। ধূসর, বাদামি, এমনকি কালো কাঠবিরালিও চোখে পড়েছে, তবে সাদা এর আগে দেখিনি। তবে এরপরও এর দর্শন বিরল কিনা এ নিয়ে সন্দেহ ছিল। সে সন্দেহ দূর হল মানুষের ঢল থেকে।
ছবি তুলতে সাধারণত একটা কৃপণতা কাজ করলেও এর ছবি দুর্লভ অনুভূত হওয়ার পর মোবাইল ফোনের মেমোরির কিছু যায়গা এর জন্য বরাদ্দ না করা অন্যায় হবে বুঝতে পারলাম।
অন্তরজালের গহীনে ডুব দিয়ে প্রতীয়মান হল যে, সাদা কাঠবিড়ালি দেখা যায় প্রতি এক লক্ষে একটি। তবে এটি কোনো আলাদা প্রজাতি নয়। এটি সর্বব্যাপী পূর্বাঞ্চলীয় ধূসর কাঠবিড়ালির বিরল এক জীনতত্ত্বীয় ঘটনা।
শ’খানেক পর্যটকের মধ্যমণি হয়ে বসেছিলো সাদা এই কাঠবিড়ালি। এত পর্যটকের মনোযোগ বোধ করি ক’দিন আগে এই পার্কে ফোঁটা টিউলিপ ফুলই শুধু পেয়েছিল। অকস্মাৎ আমার দুরন্ত ভাগ্নের তাড়া খেয়ে সে পালাল। পর্যটকেরাও যে যার দিকে রওনা দিল।
ধূসর কাঠবিড়ালিগুলো হয়ত আজকের কম দর্শক মনোযোগের জন্য মনে মনে নিজের গাত্রবর্ণকে দোষারোপ করতে লাগল।
লেখক: গণস্বাস্থ্য গবেষক, এম.পি.এইচ. (সেইন্ট জন’স ইউনিভার্সিটি, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র)
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |