‘আমিরাত-বাংলাদেশ জনশক্তি চুক্তি বড় সাফল্য’

প্রায় সাত বছর বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে জনশক্তি রপ্তানির জন্য দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়াকে ‘বড় সাফল্য’ হিসেবে দেখছেন বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব নমিতা হালদার।

প্রবাস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2018, 11:58 AM
Updated : 20 April 2018, 12:01 PM

বুধবার দুবাইয়ে ওই সমঝোতা স্মারকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী নাসের বিন থানি জুমা আল হামলি এবং বাংলাদেশের পক্ষে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে নমিতা হালদার উপস্থিত ছিলেন।

সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তারাও অংশ নেন।

পরে বিকালে আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব।

সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর কবীর বাপপির নেওয়া সাক্ষাৎকারের প্রধান দিকগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-

জাহাঙ্গীর: প্রায় ৮ বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানি প্রায় বন্ধ। এদেশে বাংলাদেশিদের সব ধরনের ভিসা প্রক্রিয়াও বন্ধ। এ পরিস্থিতিতে এ চুক্তিকে কীভাবে দেখছেন?

নমিতা: ২০১২ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমাদের কর্মী পাঠানো প্রায় বন্ধ ছিল। আমাদের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এখানে মোট ১৯টি ক্যাটাগরিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রাইভেট স্পন্সরের অধীনে আমাদের লোক নিতে অনুমতি দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটা বড় সাফল্য বলে আমরা মনে করি। দেশের মানব সম্পদ ও আমিরাতিকরণ মন্ত্রণালয়ের এ অনুমোদনকে আমরা স্বাগত জানাই।

জাহাঙ্গীর: এ চুক্তি কি ধরনের সমাধান আনবে বলে মনে করেন?

নমিতা:
তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে যে, এটা কেবল শুরু। পরবর্তীতে বৃহত্তর শ্রমবাজারে, মেগা কোম্পানিগুলোতে ও অন্যান্য সেক্টরে আমাদের লোক নেওয়ার দ্বার খুলে যাবে। এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে তাদের প্রচেষ্টাও অব্যাহত থাকবে বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। এটি একটি শুভ সূচনা।

জাহাঙ্গীর: আরব আমিরাতের পক্ষ থেকে এখন যে দক্ষ শ্রমিকের কথা বলা হচ্ছে, আমাদের এজন্য কতটুকু সক্ষমতা রয়েছে?

নমিতা হালদার: আমরা চাহিদার বিপরীতে কর্মী দিতে প্রস্তুত আছি। এ চাহিদা যাবে স্পন্সরের কাছ থেকে। দক্ষ কর্মী আমাদের প্রস্তুত আছে। এ মুহূর্তে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ডাটাবেইজ অনুযায়ী আমাদের ৩২ হাজার দক্ষ কর্মী প্রস্তুত আছে। যে কোনো দক্ষতায়, যে কোনো কোম্পানি আমাদের কাছে কর্মী চাইলে আমরা দিতে পারব। তবে তা নির্ভর করবে তাদের চাহিদার উপর। তাদের কী চাহিদা সে অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি থাকবে।

জাহাঙ্গীর: আমাদের পেশাজীবিদের এদেশে আসার ব্যাপারে কোনো অন্তরায় আছে কি?

নমিতা:  এখন পর্যন্ত তারা আমাদের আশ্বস্ত করে আসছেন যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাকাউন্টেন্ট এ ধরনের প্রফেশানালদেরও তারা আনবেন। এ বিষয়ে তারা আমাদের সঙ্গে আবার বসবেন।

জাহাঙ্গীর: সুনির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ কি ঠিক হয়েছে এ বিষয়ে?

নমিতা:  ওরা বলেছে খুব শিঘ্র। আমরা ওভাবে বলছি না। যেহেতু আমাদের একটা জয়েন্ট কমিটি গঠন করার কথা আছে। আমরা এই জয়েন্ট কমিটি গঠন করবো সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে, তবে তা দশ দিনের মধ্যেও হতে পারে। কমিটি গঠন করার পর যখন আমরা আবার বসবো তখন আরো নতুন দ্বার উম্মোচিত হবে আশা করি।

জাহাঙ্গীর:
দীর্ঘ ৮ বছর পর সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাংলাদেশের মধ্যকার জয়েন্ট কমিশনের চতুর্থ সেশনের বৈঠক হয় গত ফেব্রুয়ারিতে, এতে দুদেশের অমিমাংসিত ইস্যুগুলো সমাধানে বিশাল কালক্ষেপণ হয়েছে। ভবিষ্যতে তার পুনরাবৃত্তি ঘটার কোন আশঙ্কা আছে কিনা?

নমিতা হালদার: এটা ভবিষ্যত বলে দেবে। তবে আমরা কখনোই চাইবো না যে এ ধরনের অচলবস্থা আবার আসুক। আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টার কোন ঘাটতি থাকবে না।

জাহাঙ্গীর: বুধবার যে দুদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে এর ভবিষ্যত নিয়ে আপনি কতোটা আশাবাদী?

নমিতা: আমি অনেক আশাবাদী, আশাবাদী না হলে আমি এ পর্যন্ত আসতাম না। আমি আশা করি একটা শুভ সূচনা হলো, তার পথ ধরে ভবিষ্যতে তা আমাদের দেশের জন্য আরো অনেক সুফল বয়ে আনবে।

জাহাঙ্গীর: আপনাকে ধন্যবাদ।

নমিতা: আপনাকেও ধন্যবাদ।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!