মানুষ যেখানে বসন্তের আগমনে প্রকৃতির সাথে খেলা করছে, চারিদিকে বিভিন্ন রঙের মাতামাতি দেখা যাচ্ছে, সেখানে ইংল্যান্ডে একটি রঙ পুরো প্রকৃতিকে ঘিরে রেখেছে। তাই বসন্তের আনন্দ হারিয়ে গিয়েছে সাদা রঙের কারণে।
বসন্ত আগমনের পর প্রকৃতি সাধারণত বিভিন্ন রঙ নিয়ে খেলা করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু হঠাৎ এই দেশে তুষারের আর্বিভাবে বসন্তের আনন্দ ধুলিসাৎ হয়ে গেলো। কি অদ্ভুত ব্যাপার, তাই না! তবে এক দিক দিয়ে আমার জন্য ভালোই হলো।
প্রচণ্ড জ্বর থাকা সত্ত্বেও সেদিন আমি মিস করিনি তুষারের স্পর্শ। কারণ, অনেক বছর অপেক্ষার পর অবশেষে তুষার দেখার স্বপ্ন পূরণ হলো। সেই স্মৃতিগুলোকে ক্যামেরায় বন্দী করতে এক সেকেন্ডও দেরি করিনি।
শুধু যে বড়রা উপভোগ করেছে, তা নয়। বাচ্চারাও ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছে তুষারের সাথে খেলা করার জন্য। তবে যারা সবসময় তুষারপাত দেখে অভ্যস্ত, তাদের মধ্যে বিরক্তির ভাব কিছুটা হলেও দেখা গিয়েছে। কারণ, তুষারের সময় পুরো জনজীবন অনেক দুর্বিসহ হয়ে উঠে। যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজ, এমনকি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকে।
শুধু লন্ডন নয়, এবার পুরো ইংল্যান্ড জুড়ে ছিলো তুষারপাত। এই তুষারপাতের পরিমাণ ছিলো তিন সেন্টিমিটার। তবে লন্ডনের বাইরে তুষারপাতের পরিমাণ ছিলো ১৭ থেকে ৩২ সেন্টিমিটার, যা গত পাঁচ বছরেও দেখা যায় নি।
অনেকে অবশ্য বলেছেন, শেষ কবে তুষারপাত হয়েছিলো তা অনেকেরই জানা নেই। এও শুনেছি যে, আমার হয়তো এখন তুষারপাত ভালো লাগছে, কিন্তু তার দুই-তিন দিন পরে তা বিরক্তিতে রূপ নেবে। কারণ, বরফ জমে থাকার কারণে প্রত্যেকটি রাস্তাঘাট তখন পিচ্ছিল ও নোংরা হয়ে থাকবে, তখন ঘর থেকে বের হতে ইচ্ছে করে না। এমনকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজেও ব্যাঘাত ঘটে।
আমার মতো হয়তো অনেকেই চেয়েছেন তুষারের শুভ্রতা ও স্পর্শ আরও বেশিদিন থাকুক। কারণ, আবার কবে এই রকম তুষারের খেলা ও দুষ্টুমি দেখতে পাবে লন্ডনবাসী, তারও কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই।
লেখক: প্রবাসী শিক্ষার্থী ও সাবেক গণমাধ্যমকর্মী
ই-মেইল: topu1212@yahoo.com
লেখকের আরও পড়ুন
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |