নিউ ইয়র্কে অর্থনীতি বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের অর্থনৈতিক গতি-প্রকৃতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2018, 05:45 AM
Updated : 11 April 2018, 05:45 AM

নিউ ইয়র্কে ‘সপ্তম আন্তর্জাতিক বিজনেস অ্যান্ড ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্স’ শিরোনামে দুই দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষ হয়েছে মঙ্গলবার।

নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকায় ‘ক্রাউন প্লাজা জেএফকে এয়ারপোর্ট হোটেল’-এর বলরুমে এ সম্মেলনের আয়োজন করে যুক্তরাজ্যের এবিআরএম (একাডেমি অব বিজনেস অ্যান্ড রিটেইল ম্যানেজমেন্ট), নিউ ইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির মেডগার এভার্স কলেজ ও জার্নাল অব বিজনেস অ্যান্ড রিটেইল ম্যানেজমেন্ট রিসার্স।

সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ৩৬টি দেশের ১১০ জন স্কলার ও অর্থনীতিবিদরা অংশ নেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চীন, কানাডা, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইতালি, ব্রাজিল, মিশর, সৌদি আরব, পোল্যান্ড, ঘানা, নাইজেরিয়া, রাশিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কেনিয়া, স্পেন, মেক্সিকো ও জাপানের গবেষকসহ অনেকেই এসেছেন।

সম্মেলনে একাডেমিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে ‘রিসার্চ কাউন্সিল’ গঠন করার কথা বলা হয়।

এই সম্মেলনের অন্যতম উদ্যোক্তা যুক্তরাজ্যের এবিআরএম-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান বৃটিশ-বাংলাদেশি পি আর দত্ত বলেন, “উন্নয়ন ও প্রগতির জন্যে চাই মৌলিক গবেষণা। কিন্তু বাংলাদেশ এক্ষেত্রে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জার্নালে বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ পাচ্ছে না। এ জন্যে বিশ্বের প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী কিংবা রাষ্ট্র বিজ্ঞানীরা তা পড়তে সক্ষম হচ্ছেন না। অথচ সরেজমিনে বাংলাদেশ অনেক ভালো করছে।”

তিনি বলেন, “গত বছরও আমি ঢাকায় কনফারেন্স করেছি। বেশ ক’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অংশ নিয়েছেন। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও ছিলেন। আমি মৌলিক গবেষণার প্রয়োজনীয়তা সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অর্থ বরাদ্দ না পেলে কাজের কাজ কিছুই হবে না।”

গবেষণা এবং সুব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ও প্রগতির কারণগুলো সন্ধান করে তা সমাধানের গবেষণামূলক সুপারিশ তৈরির জন্যেই দুই দিনের এ সম্মেলন হলো বলে উল্লেখ করেন পি আর দত্ত।

সম্মেলনের সংগঠক এবিআরএম-এর প্রকল্প পরিচালক বি আর চক্রবর্তী বলেন, “গত সাত বছরে আমরা বিভিন্ন স্থানে এমন সম্মেলন করেছি। সবগুলোই মানবতার কল্যাণে সুফল আনার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও অবদান রেখেছে।”

সম্মেলনের সহযোগী আয়োজক নিউ ইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির মেডগার এভার্স কলেজের বিজনেস স্কুলের ডিন যো-অ্যান রোল সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলেন, “দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থাপনার অবদান অপরিসীম। দেশটির রাজনৈতিক স্থিতি অব্যাহত থাকলে উন্নয়নের সম্ভাবনা কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।”

এ সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ধীরাজ মুখার্জি। উদীয়মান অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন সম্পর্কিত পর্বে গবেষণামূলক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের মেডগার এভার্স কলেজের অধ্যাপক ওয়ালেস ফোর্ড।

থাইল্যান্ডের নিডা বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক সলিল সেন কথা বলেন ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং বিষয়ে। বারবাডোজের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধ্যাপক অ্যান্থনী উড বলেছেন অর্থনীতি, হিসাব ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আলোকে।

ফ্রান্সিস মারিয়ন ইউনিভার্সিটির বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ইয়ং শিন বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন মানব সম্পদের ব্যবহার বিধি নিয়ে। মেডগার এভার্স কলেজের অধ্যাপক খাসাডিয়ো যাজাবেল উদীয়মান এবং উন্নয়ন অর্থনীতির আবহে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনার আলোকে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর আলোকপাত করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিভার্সিটি অব লিমপপোর অধ্যাপক মকোকো সেবোলা।

শেষের দিন মূল বক্তব্য দেন মেডগার এভার্স কলেজের অধ্যাপক কিম মুরনিং। তার বিষয় ছিল পরিবেশ সুরক্ষা। শিক্ষা, শিক্ষকতা এবং শেখা বিষয়ে পর্যালোচনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন একই কলেজের অধ্যাপক গেনাডি লোম্যাক।

সামনের  বছরেও এই একই সময়ে এখানে অষ্টম আন্তর্জাতিক সম্মেলন হবে বলে জানায় আয়োজকরা।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!