ক্যান্টারবেরী, নিউজিল্যান্ডের পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি হলেও স্থানীয় সময় বুধবারই সেখানে প্রথমবারের মত আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হলো।
১৯৫২ সালের এই দিনটিতে মাতৃভাষা বাংলার জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটির সূচনা হয় বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে।
আয়োজনের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মডারেটর এস এম আকরামুল কবীর। এরপর উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট মেজবাহউদ্দীন চৌধুরী।
তিনি বলেন, “ক্রাইস্টচার্চ সিটি কাউন্সিল এবং ক্যান্টারবেরি ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশ সোসাইটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট মৃণ্ময় মিত্র ক্রাইস্টচার্চ সিটি কাউন্সিলের সাথে যোগাযোগ করেন এবং মাতৃভাষা দিবস উদযাপস উপলক্ষে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের গুরুত্ব কাউন্সিলকে তুলে ধরেন।”
তার বক্তব্যের পর মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস এবং তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্তির যাত্রাপথ নিয়ে নির্মিত একটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয়।
অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ সোসাইটির সদস্য তাদের এই অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি এস এম আকরামুল কবীর বলেন, “এই প্রথম ক্যান্টারবেরি ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নিজেদের ক্যাম্পাসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করলেন। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা আমাদের ভাষা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরতে পেরেছি। একই সাথে আমরা আমাদের বাঙালি জাতীয় সত্ত্বা অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি।”
এরপরে বক্তব্য দেন স্বর্ণালী অতশী তিশি।
এসময় তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজের দেশ, ভাষা ও সংস্কৃতিকে উপস্থাপন করা আমাদের দায়িত্বগুলোর একটি।”
বাংলাদেশ সোসাইটির আয়োজিত অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে ছিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শুরুতেই সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্বর্ণালী অতশী তিশি এবং তার ছেলে টপ্পা। আয়োজনটিকে পরিপূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক করে তোলেন বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে। মারিয়া ক্যারোলিনা নিয়েতো আবৃত্তি করেন লাতিন আমেরিকান কবিতা, পাঞ্জাবি সংস্কৃতির পরিবেশনা করেন হারপিন্দার কউর। নাদিন ভিকার্স, নিজের দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থানের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। সৌরভ, স্বর্ণালী অতশী তিশি এবং মোহাম্মদ আওরঙ্গজেবের পরিবেশনায় অনুষ্ঠানে আরও দুটি দেশাত্ববোধক গান পরিবেশিত হয়।
এই অনুষ্ঠানকে সফল করতে কাজ করেছেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি মেজবাহউদ্দীন চৌধুরী, সহ-সভাপতি মৃন্ময় মিত্র, সাধারণ সম্পাদক এস এম আকরামুল কবির, সদস্য- এমরুল আহসান মেহেদী, সিরাজিস সালেকীন, মো. মেহেদী হাসান, স্বর্ণালী অতশী তিশি, আবদুল লাহিল লাকি এবং আরো অনেকে।
অনুষ্ঠানের শেষে ইউনিভার্সিটি অব ক্যান্টারবেরির লেকচারার জিন কিম বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, “বহুভাষী এই সমাজে থেকেও আপনারা যেভাবে আপনাদের শিশু, পরিবার ও সমাজকে মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি শেখার জন্য উদ্ধুদ্ধ করছেন তা দেখে আমি আসলেই মুগ্ধ। আমি আশা করি, আপনারা এবং আপনাদের সোসাইটি ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে এরকম উদযাপন ভবিষ্যতেও করবেন।”
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |