‘হিন্দি না শিখলে পশ্চিমবঙ্গে চাকরি পাওয়া যায় না’

চাকরির প্রয়োজনে কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার্থীরা বাংলার বদলে হিন্দি আর ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ঝুঁকছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দুই বাংলার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীরা।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2018, 12:28 PM
Updated : 18 Feb 2018, 12:28 PM

স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস এর একটি পার্টি সেন্টারে ‘যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম’ এর এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। 

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের প্রধান সমন্বয়কারী এম এ হান্নান খান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক এবং ‘নিউজ টোয়েন্টিফোর’ চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নঈম নিজাম এবং পশ্চিমবঙ্গের লেখক ও মানবাধিকার কর্মী পার্থ ব্যানার্জি।

পার্থ ব্যানার্জি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের নর্থ কলকাতায় ১৮০ বছরের পুরনো ‘স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল’-এ ভর্তির সুযোগ পাওয়াটা একসময় সকলের জন্যেই প্রেস্টিজিয়াস ছিল। আমিও সেই স্কুলে অধ্যয়ন করেছি। এখন সেই স্কুলের সামনে ‘ভর্তি চলিতেছে’ সাইনবোর্ড দেখা যায়। হিন্দি আর ইংরেজীর আগ্রাসনে কলকাতা থেকে বাংলা হারিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে।

“এর চেয়ে দু:খজনক আর ভয়ংকর কী হতে পারে! তবে পশ্চিমবঙ্গের মফস্বল এলাকায় বাংলা ভাষা টিকিয়ে রাখার মানুষের অভাব নেই। হিন্দি না শিখলে চাকরি পাওয়া যায় না।”

তিনি বলেন, “ইন্টারনেটের যুগে উচ্চ বেতনের চাকরির জন্যে ইংরেজির বিকল্প নেই বলে মনে করছেন সকলে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সরকারি স্কুলে ভর্তি হওয়াকে এখন প্রায় সকলেই, যাদের অর্থ-বিত্ত রয়েছে- অপমানজনক মনে করছেন। তারা সন্তানকে প্রাইভেট স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াতে ব্যস্ত। এমন প্রবণতা রোধ করতে হবে সম্মিলিতভাবে।”

নঈম নিজাম বলেন, “কলকাতার লেখকদের বই এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশে। কলকাতায় নতুন প্রজন্মে বাংলা ভাষা আর সংস্কৃতির প্রতি দরদ নেই। এখন সে স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা। বাংলা ভাষার জন্যে রক্তদানের পথ বেয়েই বাঙালিরা স্বাধীনতা লাভ করে বাংলা সংস্কৃতিকে বিশেষ এক আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।”

আলোচনা সভায় একাত্তরের ঘাতকদের বিচার প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোকপাত করেন হান্নান খান।

তিনি বলেন, “এখনো ৭০০ মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এগুলো যদি একটি আদালতের মাধ্যমে বিচার চলতে থাকে, তাহলে ৬০ বছরেও শেষ হবে না। এজন্যে আমি সরকার সমীপে প্রস্তাব পেশ করেছি আদালতের সংখ্যা বাড়িয়ে বিভাগীয় শহরে নিয়ে যাবার জন্যে।”

হান্নান খান আরও বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত রাখতেই আওয়ামী লীগের সরকার দরকার বারবার। উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা এগিয়ে নিতেও দরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বাংলাদেশ এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।”

যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক কাদের মিয়া বলেন, “সামনের নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে দরকার তৃণমূলে ঐক্য। এলাকার এমপির সাথে দলীয় নেতাদের সম্পর্কে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। দলীয় নেতা-কর্মীদের ‘সাইজ করা’র মানসিকতা পরিহার করা জরুরী।”

আলোচনায় আরও অংশ নেন সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, সেক্রেটারি রেজাউল বারি, যুগ্ম সম্পাদক ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ-সভাপতি আলহাজ্ব কাদের মিয়া, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম, নির্বাহী সদস্য কানু দত্ত, সেক্যুলার ফোরামের শুভ রায় এবং সন্দ্বীপ পৌরসভা উন্নয়ন কমিটির জাফরউল্লাহ।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!