আকায়েদের সন্ত্রাসবাদী কাজের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রে ফের সরব প্রবাসীরা

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে আকায়েদ উল্লাহর সন্ত্রাসবাদী কাজের প্রতিবাদে প্রবাসী রা আবারও বিক্ষোভ করেছেন। এসব সমাবেশ থেকে আমেরিকা প্রবাসী ‘বাংলাদেশিরই জীবন জীবিকা’ হুমকির মুখে পড়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বক্তারা।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2017, 02:38 PM
Updated : 13 Dec 2017, 02:38 PM

মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মত জ্যাকসন হাইটস, ব্রঙ্কস এবং ব্রুকলিনের বিভিন্ন স্থানে চারটি মানববন্ধন, র‌্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এসব কর্মসূচির প্রত্যেকটিতেই আকায়েদ উল্লাহকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত না করে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে তার ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’র দাবি জানানো হয়।

নিউ ইয়র্ক অঞ্চলের প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র ব্যানারে র‌্যালি এবং সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জ্যাকসন হাইটসের বেলাজিনো পার্টি হলে।

সংগঠনের সভাপতি কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে এ সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিক। নেতাদের  মধ্যে ছিলেন আবুল খায়ের খালেক, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, রিজু মোহাম্মদ এবং  মনিকা রায় প্রমুখ।

প্রবাসের বিশিষ্টজনেরাও উপস্থিত থেকে আকায়েদ উল্লাহর প্রতি ধিক্কার জানান। এ ধরনের জঙ্গি তৎপরতাকে ‘মানবতার শত্রু’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়,  বাংলাদেশি-আমেরিকানরা কখনো জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেয়নি, দেবেও না।

সন্ধ্যায় ব্রঙ্কসে বাংলাদেশি অধ্যুষিত স্টার্লিং-বাংলাবাজার এভিনিউ এলাকায় আরেকটি সমাবেশ হয়। বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটি কাউন্সিল এ বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করে।

বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ এন মজুমদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল হক, ব্রঙ্কস বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এন ইসলাম মামুন, সমাজ কল্যাণকর্মী সারোয়ার জাহান লাহীন, রেজা আবদুল্লাহ, আকসাদ আলী বাবুল, জাকির চৌধুরী, মো. মতিন সরকার, এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুলের সিইও সাইদুর এবং রহমান লিংকন।

মোহাম্মদ এন মজুমদার তার বক্তৃতায় ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন,  “আকায়েদ বাংলাদেশি নামের কলঙ্ক। আমরা তাকে ঘৃণা করি। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বাংলাদেশিদের মান-সম্মান ধুলিস্মাৎ হয়েছে। বাংলাদেশিদের মুখ পুড়েছে ‘কুলঙ্গার’ আকায়েদের কারণে। হুমকির মুখে পড়েছে প্রবাসী বাঙালিদের জীবন-জীবিকা।”

নজরুল হক বলেন,  “গোটা কমিউনিটিতে প্রভাব পড়েছে অপ্রত্যাশিত এ ঘটনায়। বাংলাদেশি কমিউনিটি এ ধরনের ঘৃণ্য কাজকে কোনওভাবেই মেনে নিতে পারে না।”

অন্যান্য বক্তারা বলেন,  এদেশও তাদের সকলের। এ দেশকে নিরাপদ রাখা সবার দায়িত্ব।

বক্তারা সস্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন,  সন্ত্রাসবাদের জায়গা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে হবে না। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরার্বৃত্তি দেখতে চান না বলেও তারা উল্লেখ করেন।

আগেরদিন সোমবার রাতে নিউ ইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসের খাবার বাড়ি চত্বর থেকে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‍্যালি শেষে প্রবাসী বাংলাদেশিরা মানববন্ধন করেন।  

মানববন্ধনের পরে সমাবেশ থেকে বক্তারা, সন্তানদের বেশি করে সময় দেওয়ার পরামর্শ দেন।

আকায়েদের আচরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নূরল আলম বাবু, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ আহমেদ এবং সেক্রেটারি রেজাউল বারি, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া এবং সেক্রেটারি এটি এম রানা, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি রিজু মোহাম্মদ।

এসব বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতি ও দেশ হিসেবে সন্ত্রাসের বিষয়ে জিরো টলারেন্সে বিশ্বাসী। সন্ত্রাসকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে। একইভাবে এই প্রবাসেও তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার। একজন আকায়েদের আচরণকে কোনভাবেই বাংলাদেশি-আমেরিকান জনগোষ্ঠির ওপর চাপিয়ে দেয়া চলবে না। আত্মঘাতি আকায়েদ উল্লাহ ‘বাংলাদেশি অভিবাসী’ হলেও সে কিছুতেই বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে না।

প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন!