ক্ষুদ্র হলেও এর নাম-দাম ও ক্ষমতা কিন্তু কম নয়। সারাবছরই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে এদেশে।
বিশ্বের ক্ষুদ্রতম এ দেশটিতে যেতে ভিসা লাগে না। ভ্যাটিকান সিটি ইতালির রোম শহরের ভেতরে অবস্থিত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। পোপ এখানকার রাষ্ট্রনেতা। ভ্যাটিকানে রোমান ক্যাথলিক গির্জার বিশ্ব সদর দপ্তর অবস্থিত। এখান থেকেই পোপ ক্যাথলিকদের ধর্মীয় বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
ভ্যাটিকানের ভেতরে কোন প্রাকৃতিক জলাশয় নেই। দেশটি মূলত একটি ছোট পাহাড়ের উপর অবস্থিত, যার নাম ভ্যাটিকান পাহাড়।
দেশটির আয়তন মাত্র ০.৪৪ বর্গ কিলোমিটার বা ১১০ একর। জনসংখ্যা হাজার খানেক। ইতালির রোম শহরের মধ্যস্থলে প্রাচীরঘেরা একটি এলাকায় উত্তর-পশ্চিম রোমের ভ্যাটিকান পাহাড়ের উপর একটি ত্রিভুজাকৃতি জায়গায়, তিবের নদীর ঠিক পশ্চিমে দেশটি অবস্থিত।
পুরো দেশটি ঘুরে দেখতে সময় লাগে ঘণ্টাখানেকর মতো। ভ্যাটিকান দেশ ও দেশের আশপাশে বাংলাদেশিদের অবস্থান চোখে পরার মতো। বাংলাদেশি অনেকেই ছোট বড় ব্যবসা করছেন এখানে।
পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা হয়নি। কারণ তখন তিনি ছিলেন ফিলিপাইনে। তবে কিছু মৃত পোপের সঙ্গে দেখা হয়েছে। শুনলাম পোপদের মৃত্যুর পর লাশ মমি করে এখানেই রেখে দেওয়া হয়।
ভ্যাটিকেনের জাদুঘরটি হলো ৯ মাইল লম্বা বা সাড়ে ১৪ কিলোমিটার। বলা হয়ে থাকে, ভেতরের প্রতিটি জিনিস দেখতে ১ মিনিট করে সময় নিলেও পুরো জাদুঘর দেখা শেষ করতে ৪ বছর লেগে যাবে।
খ্রিস্ট ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান ধর্মগুরু পোপ। রোম শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত ভ্যাটিকান দেশে পোপের প্রধান কার্যালয়। একটি মিউজিয়াম, একটি গির্জা ও পোপের ভাষণ দেওয়ার এক আলিশান কুরসি ও ভাষণ শোনার জন্য শ্রোতাদের বসার স্থান, এ হলো সংক্ষেপে ভ্যাটিকান দেশের বর্ণনা।
ভ্যাটিকান সিটির নিজস্ব সংবিধান আছে। ডাকব্যবস্থা, সিলমোহর, পতাকাও আছে। আছে নিজস্ব সেনাবাহিনীও, যার নাম সুইস গার্ড। এ বাহিনী রঙিন বিশেষ এক ধরণের পোশাক পরে থাকেন। বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ১০০ এর মতো। ভ্যাটিকান রেডিও স্টেশন সারা বিশ্বে পোপের ভাষণ ছড়িয়ে দেয়।
ভ্যাটিকানের কোন সরকারি ভাষা নেই। তবে ইতালিয় ভাষা সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা। রোমান ক্যাথলিক গির্জার দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে লাতিন ভাষার বিশেষ মর্যাদা আছে।
ইতালিয় সরকার ও পোপ সম্প্রদায়ের মধ্যে বহু বছর ধরে বিতর্কের পর ১৯২৯ সালে লাতেরান চুক্তির অধীনে ভ্যাটিকান সিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ চুক্তির অধীনে ক্যাথলিক গির্জা ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে অন্য সব পোপিয় রাষ্ট্র থেকে দাবি প্রত্যাহার করে নেয় এবং স্বাধীন ভ্যাটিকান সিটি হিসেবে সার্বভৌমত্ব অর্জন করে।
চলতি মাসের শেষে পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশ আসার কথা রয়েছে। বাংলাদেশে আগমনে পোপ ফ্রান্সিসকে জানাই স্বাগতম!
লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি
ইমেইল- md.naim@aol.com
এই লেখকের আরও লেখা
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |