স্কটল্যান্ডে যাওয়ার পর যেমন মুগ্ধ হয়েছি সেখানকার পাহাড়ঘেরা মনোরম পরিবেশ দেখে, তেমনি অবাকও হয়েছি সেখানকার চেক কাপড়ের সমারোহ দেখে।
বাহারি রকমের চেক ডিজাইন ও নকশা করা কাপড় মুহুর্তের মধ্যে আকৃষ্ট করে- নজর কেড়ে নেয়। আমি মনে করতাম শুধু আমাদের দেশেই চেক কাপড় পাওয়া যায়, কিন্তু স্কটল্যান্ডে যাওয়ার পর দেখলাম- এম্মা এতো চেক কাপড়েই মোড়া দেশরে বাবা!
চেক কাপড় বা চেক ডিজাইন দিয়ে যে কতো কিছু করা যায় স্কটল্যান্ডে না গেলে হয়তো জানতে পারতাম না।
ঘরের পর্দা, কুশন কভার, সোফার কাপড়, টেবিল ক্লথ, কম্বল ও বিছানার চাদর... পুরাই চেকে চেকারণ্য!
স্কটল্যান্ডের অর্থনীতিতে পর্যটন শিল্পের বিশাল অবদান, আর পর্যটকরা সেখানে ঘুরতে গিয়ে দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে স্কটিশ ‘চেক ডিজাইনের ঐতিহ্য’।
স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে বড়ো আর্কষণ হচ্ছে ব্যাগ-পাইপার মিউজিক এবং রাজধানী এডিনবার্গ যেন পুরোটাই এক অডিটোরিয়াম!
ব্যাগ-পাইপারের সুর আর বাজানেওয়ালাদের পোশাক আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে। মনে হবে আপনি যেন সদা এক উৎসবের দেশে এসেছেন!
স্কটিশদের জাতীয় পোশাকটা তো অনেকেই দেখেছেন! এমনকি ছেলেরাও, মেয়েদের স্কার্টের মতো চেক চেক ডিজাইনের জাতীয় পোশাক পরে।
এসব সুভ্যেনিরের বেশিরভাগেরই দাম ১০ পাউন্ড থেকে শুরু করে ৫০ পাউন্ডের মধ্যে।
এমনকি বেশিরভাগ রেস্তোরাঁর ডেকোরেশনেও চেকের ডিজাইন করা। পুরো দেশটি চেক ডিজাইনে মোড়ানো।
স্কটিশদের চেক ডিজাইনে মুগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি হতাশও হয়েছি আমাদের দেশিয় চেকের দুরাবস্থার কথা চিন্তা করে।
এককালে আমাদের দেশিয় চেক ছিলো আমাদের ঐতিহ্য! বিদেশি চেক ডিজাইনের কাপড়ের কারণে দেশিয় চেক ডিজাইনের অবস্থা তথৈবচ!
এক সময় দেশিয় চেক দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ব্যবসা শুরু করে এবং সেই সাথে এটি জনপ্রিয়তাও পায়।
কিন্তু ওই যা হয়, দীর্ঘমেয়াদে লেগে থাকার অভাব! উদ্যমের কারণেই হয়তো আবার ঝিমিয়ে পড়েছে দেশিয় চেক ডিজাইনের ঝোঁক!
উত্তর দিলাম- না এতো আমার দেশ থেকে কেনা! বিক্রেতা তো আমার দেশিয় চেক দেখে মুগ্ধ।
তারও ধারণা ছিলো শুধু স্কটল্যান্ডেই চেক কাপড় পাওয়া যায়। কিন্তু আমাকে দেখে তার ভুল ভাঙলো।
আমরাও তো পারি আমাদের দেশিয় চেক ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের দেশকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করতে। আর এজন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থেকে নয়, জনগণ বা নাগরিক হিসেবেও আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।
ছবি কৃতজ্ঞতা: লেখক ও শারমিন জান্নাত ভুট্টো
লেখক: প্রবাসী শিক্ষার্থী ও সাবেক গণমাধ্যমকর্মী
ই-মেইল: topu1212@yahoo.com
লেখকের আরও পড়ুন
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |