টরন্টোতে ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’

কানাডার টরন্টোতে একটি সামাজিক সংগঠন প্রবাসী শিশু-কিশোরদের জন্য করেছিল এই আয়োজন।

সদেরা সুজন, কানাডার মন্ট্রিয়াল থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2015, 02:50 PM
Updated : 24 Nov 2015, 02:31 PM

শনিবার টরন্টোর বি.সি.সি.এস মিলনায়তনে নতুন প্রজন্মকে বাঙালির গৌরবময় ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য আয়োজিত হয় ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’। 

টরন্টোর ‘বাংলাদেশ সেন্টার এন্ড কমিউনিটি সার্ভিসেস’(বি.সি.সি.এস), এর অঙ্গ সংগঠন ‘ইয়ুথ এনগেজমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’(ওয়াই.ই.আই) এই আয়োজন করে।  

অনুষ্ঠানে শিশু কিশোরদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন কবি আসাদ চৌধুরী, শিক্ষাবিদ মোজাম্মেল খান এবং বাংলাদেশের ঘাসফুল প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘আলো আঁধারের একাত্তর’ গ্রন্থের রচয়িতা মুক্তিযোদ্ধা সেরাজুল কাদের।

দেশাত্মবোধক গান আর কবিতায় সাজানো এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয় টরন্টোতে বসবাসরত প্রবাসী শিশু কিশোররা। মিফতাহুল মোহনা আর রাইদাহ ফায়রূজের দুটি একক এবং সিম্ফনি সঙ্গীত একাডেমির শিক্ষার্থীদের দুটি দলগত পরিবেশনা আর রূপক রায়ের আবৃত্তি মুগ্ধ করে অনেককেই।

কবি আসাদ চৌধুরী তার বক্তব্যে শিশু-কিশোরদের জন্য বাংলাদেশের হাজার বছরের অস্তিত্ব, সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বাঙালির অসাধারণ সব কীর্তি, নোবেল বিজয়ী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের থেকে বাহান্ন সালের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর অসামান্য ত্যাগের কথা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার কথা, মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে লক্ষ লক্ষ মানুষের মরণপণ সংগ্রাম ও সীমাহীন আত্মত্যাগের কথা উপস্থিত শিশু-কিশোর ও তাদের অভিভাবকদের আলোড়িত ও আবেগপ্রবণ করে তোলে।

মিলনায়তনের বড় পর্দায় স্থিরচিত্র আর কবিতার মিশেলে মুক্তিযোদ্ধা সেরাজুল কাদেরের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য উপস্থাপনা বাংলাদেশের ইতিহাসের সাক্ষী অনেক মুহূর্তকে উপস্থিথ শিশু-কিশোরদের চোখের সামনে নিয়ে আসেন।

মোজাম্মেল খান তার বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পটভূমি, বিভিন্ন বাধা বিপত্তি এবং মানবতার জন্য এই বিচারের প্রয়োজনীয়তার কথা সহজ ভাষায় শিশু-কিশোরদের সামনে তুলে ধরেন। বাঙালি অধুষ্যিত  ড্যানফোর্থ এলাকার সিটি কাউন্সিলর জ্যানেট ডেভিস তার বক্তব্যে বহু ভাষা আর সংস্কৃতির দেশ কানাডাতে শিশু-কিশোরদের জন্য এমন একটি অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেয়ার জন্য বি.সি.সি.এস এবং ওয়াই.ই.আই’কে  ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে ওয়াই.ই.আই'র পক্ষ থেকে সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের জন্য ভিক্টোরিয়া পার্ক কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রী মিফতাহুল মোহনা এবং স্যার উইলফ্রেড লরিয়ের কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী রাইফাহ নাজাহাহ খানকে ‘ওয়াই.ই.আই ভলান্টিয়ার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ওয়াই.ই.আই এর নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদকেও উপস্থিতদের সামনে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োজন, ব্যবস্থাপনা ও সঞ্চালনার দায়ীত্বে ছিলেন ওয়াই.ই.আই এর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং টরন্টোতে প্রস্তাবিত স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মানকল্পে গঠিত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিজওয়ান রহমান। সহযোগিতায় ছিলেন বি.সি.সি.এস’র পরিচালকমণ্ডলীর সভাপতি হাসিনা কাদের, সদস্য মাহবুব রেজা, আলোকচিত্রশিল্পী শাহাদাত হোসাইন পলাশ এবং সঙ্গীতশিল্পী মুক্তি প্রসাদ।

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা এখন থেকে সরাসরি আমাদেরকে জানাতে পারেন। নাম, ঠিকানা ও সংশ্লিষ্ট ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায়  probash@bdnews24.com