লস এঞ্জেলেসে বাংলা কবিতা-গান

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় শহর লস এঞ্জেলেসে হয়েছে দিনব্যাপী বাংলা কবিতা আর গানের আসর।  

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2015, 10:54 AM
Updated : 12 Nov 2015, 11:16 AM

‘রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ এবং ‘উত্তর আমেরিকা কেন্দ্রীয় কবিতা পরিষদ’ যৌথ আয়োজনে রোববার লস এঞ্জেলেসের অনুপমা রিয়া মিলয়নায়তনে হয়ে গেল দিনব্যাপী বাংলা কবিতা ও গান উৎসব।  

অনুষ্ঠানের মধ্যমণি ছিলেন শিল্পী কাদেরী কিবরিয়া।গান গাওয়া শেষে এই শিল্পী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যেকার রাজনৈতিক বিবাদ ভুলে একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। দেশি রাজনীতি নিয়ে মাতামাতির পরিবর্তে মার্কিন রাজনীতিতে মনোনিবেশের কথাও বলেন তিনি।

কবিতা ও গান শুরুর আগে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বিষয়বস্তু ছিল কবি ও কবিতা। ড. সিরাজুল্লাহ, কালিদাসের সাহিত্যকর্মের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলা সাহিত্যে কবিতার মোহন রূপটি তুলে ধরেন। জাহিদ হোসেন পিন্টু কবিতার সম্মোহনী সাংগীতিক ভাবটুকু বর্ণনা করতে গিয়ে উনিশ ও বিশ শতকের কবি সাহিত্যিকদের প্রসঙ্গ বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

মাইকেল মধুসূদন, রবি ঠাকুর, নজরুল, জীবনানন্দ আর বলাইচাঁদ (বনফুল) এর অসামান্য কাব্যময়তার বিষয়টুকু অবহিত করেন। মুকতাদীর চৌধুরী তরুণ অতীত দিনের মঙ্গল কাব্য, উনিশ ও বিশ শতকের বিশ্বময় কাব্যের রেনেসাঁ’র কথা উল্লেখ করেন।

স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন অনুষ্ঠান পরিচালক ও রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী মশহুরুল হুদা, সৈয়দ এম হোসেন বাবু ও  মুকতাদীর চৌধুরী তরুণ।

তারপর একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী কাদেরী কিবরিয়া। তিনি রজনীকান্তের আরাধনা সঙ্গীত ‘তুমি নির্মল কর উজ্জ্বল কর’ দিয়ে শুরু করেন।

তারপর নিজস্ব নিয়মে পূজা, প্রেম ও প্রকৃতি পর্বের অনেকগুলো রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন তিনি। শ্রোতাদের অনুরোধেও তিনি গেয়ে শোনান আরও কয়েকটি গান।

সোনালী দিনের মধুময় গানগুলো তিনি নিজস্ব গায়কী ভঙ্গীতে পরিবেশন করেন। তার গাওয়া এই গানগুলো আশির দশকে বিটিভিতে বেশ জনপ্রিয় ছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গান গেয়ে শোনান তিনি। মন্ত্রমুগ্ধ শ্রোতা করতালিতে এই বরেণ্য শিল্পীকে অভিনন্দিত করেন।

গান শেষে তিনি প্রবাসে সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে নিজস্ব সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে সম্প্রসারিত করার বিষয়ে সহনশীলভাবে এগিয়ে যেত আহবান জানান।

তিনি বলেন, ’রাজনৈতিক মতভেদ থাকতেই পারে তবে সেটা নিয়ে বিদেশের বিমানবন্দর, কনসুলেট  অফিস, ইউএন বা ফেডারেল অফিসের সামনে প্রতিবাদ করা যেতেই পারে কিন্তু সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া কোনভাবেই উচিত না ‘

তিনি দুঃখ করে বলেন, ‘ প্রবাসে আমাদের ভাবমূর্তি আর ক্ষুন্ন করা ঠিক হবে না। এখানকার গণমাধ্যমগুলোতে আমাদের এইসব কর্মকাণ্ড নিয়ে খবর প্রকাশিত হচ্ছে এবং এফবিআইসহ পুলিশ বিভাগ এখন বাঙালি অভিবাসীদের সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছে।’

এই শিল্পী মনে করেন, এই নেতিবাচক ধারণার ক্ষতিকর প্রভাব ইতোমধ্যেই আমাদের নতুন প্রজন্মকে আশাহত করছে। তারা মনে করছে এতে তাদের ভবিষ্যত আকাঙ্ক্ষা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

নতুন প্রজন্ম আমাদের সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন এই শিল্পী।

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা এখন থেকে সরাসরি আমাদেরকে জানাতে পারেন। পুরো নাম, ঠিকানা ও ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায় probash@bdnews24.com