‘৭০% প্রবাসী কানাডার মূলধারার রাজনীতিতে নিস্পৃহ’  

কানাডার ৭০ শতাংশ প্রবাসী বাংলাদেশি দেশটির মূলধারার রাজনীতিতে নিস্পৃহ, ১৫ শতাংশ গত দশ বছরে একবারও ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি। টরন্টো ভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা প্রগ্রেসিভ অ্যাকশন ফর কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্ট (পেইস) এর জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য।  

কানাডা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2015, 02:45 PM
Updated : 11 Oct 2015, 03:54 PM

জরিপের ফলাফলের উপর আলোচনা করতে গিয়ে বক্তারা এই ধরনের নির্লিপ্ততা ‘আত্মকেন্দ্রিক’ ও ‘সঙ্কীর্ণ’ মানসিকতা তৈরি করে বাংলাদেশি কানাডিয়ানদের সামাজিক সক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস করবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশি কানাডিয়ানদের দেশটির মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করতে সামাজিক সংগঠনগুলোর সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি হাতে নেয়া উচিত।

শনিবার টরেন্টোর ড্যানফোর্থের অ্যাক্সেস পয়েন্টে পেইস আয়োজিত "গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নাগরিক সম্পৃক্ততা: নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশি কানাডিয়ানদের ভূমিকা" শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।

পেইসের প্রেসিডেন্ট ইমামুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বেসরকারি সংস্থা ‘সেটলমেন্ট অ্যাসিসটান্স অ্যান্ড ফ্যামিলি সাপোর্ট সার্ভিসেস’এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক ডঃ কাজী হক এবং সাপ্তাহিক নতুনদেশ এর প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক শওগাত আলী সাগর।

পেইসের অ্যাক্ট প্রোগ্রামের সমন্বয়ক ব্যারিস্টার নুসরাত জাহান সংগঠনের সাম্প্রতিক জরিপের মূল পর্যবেক্ষণগুলো তুলে ধরেন। পেইস এর কার্যকরী পরিষদের সদস্য আবু মহসিনের সঞ্চালনায় ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কার্যকরী পরিষদের সদস্য প্রিয়াঙ্কা দেবনাথ।

জরিপের মূল পর্যবেক্ষণগুলো তুলে ধরে ব্যারিস্টার নুসরাত জাহান বলেন, " আমাদের কম্যুনিটির বড় অংশই নাগরিক নিঃস্পৃহতা ও বিচ্ছিন্নতায় আক্রান্ত। এর থেকে উত্তরণের জন্য সামাজিক সংগঠনগুলোর জোরদার কর্মসূচি হাতে নেয়া উচিত।"

ডঃ কাজী হক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, " অভ্যন্তরীণ দলাদলি ও বিভক্তিই মূলধারার রাজনীতিতে আমাদের অংশগ্রহণের প্রধান অন্তরায়। কানাডায় বাংলাদেশি কমিউনিটি বড় হচ্ছে,  সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটছে। তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদেরও বদলাতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রবাসে বাঙালি কমিউনিটির কানাডার রাজনীতির চর্চাই করাই উচিত, বাংলাদেশি  দলীয় রাজনীতি নয়।”  

সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর বলেন, “কানাডার ফেডারেল নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরুতে বাঙালিদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের অনেকেই দলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সম্পৃক্ত নন। ভোট এলেই প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ আর অন্য সময়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লে কমিউনিটির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোরও ভিন্ন ধারণা তৈরি হয়।”

তিনি ‘প্রার্থীতার জন্য প্রার্থীতা’ ঘোষণা না করে যোগ্য এবং উপযুক্ত নেতৃত্ব গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

পেইস এর প্রেসিডেন্ট ইমামুল হক বলেন, "পেইস নাগরিক দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি এবং মূলধারায় আমাদের কম্যুনিটির ঐক্যবদ্ধ ও কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবে।”

জরিপের উপর মূল আলোচনা শেষে সেমিনারে যোগ দেয়া বিভিন্ন পেশা ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রাণবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা এখন থেকে সরাসরি আমাদেরকে জানাতে পারেন। পুরো নাম, ঠিকানা ও ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায় probash@bdnews24.com