ভ্যাঙ্কুভারে লোকমেলা উদযাপন

উত্তর আমেরিকার বহুসংস্কৃতির দেশ কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে প্রবাসীরা যোগ দিলেন বাঙলার লোকজ মেলার এক আয়োজনে।

শাহানা আকতার মহুয়া, কানাডার ভ্যাঙ্কুভার থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2015, 11:40 AM
Updated : 21 August 2015, 05:00 AM

গত শনিবার ভ্যাঙ্কুভারের সারেতে কল্পিত এক বকুলতলায় ‘শুন্যে উড়া পাগলা ঘোড়া’ শিরোনামে এক লোকমেলার আয়োজন করে ‘প্রবাস পাঁচালী’ সংগঠন।

ছুটির দিনে গ্রীষ্মের ঝলমল রোদে জমে উঠে এই লোকমেলা ১৪২২। এই মেলায় আয়োজনের মধ্যে ছিল লোকনৃত্য, লোকগান ও যাত্রাপালা ‘হরমুজ বাদশা’।

...এক দেশে ছিল এক বাদশা। তার ছিল ছয় রানি। কিন্তু বাদশার মনে শান্তি নেই কারণ তার ঘরে কোনো সন্তান নেই।নিঃসন্তান  রাজাকে নিয়ে প্রজারা হাসাহাসি করে। অবশেষে ব্যাঙমা-ব্যাঙমির কাছ থেকে জানা যায় বাদশা যদি সপ্তম বিবাহ করেন তবে সন্তান লাভ হবে। সেনাপতি ছুটল ঘোড়া ছুটিয়ে, খুঁজে পেল সুন্দরীকন্যা বিবি হেরেমকে। বিবাহের পরে সত্যি সত্যিই সন্তানসম্ভবা হলেন হেরেম সুন্দরী।রাজ্য জুড়ে আনন্দ কিন্তু জ্বলেপুড়ে মরে অন্য রানিরা... রাজকুমারকে ফেলে আসে গভীর অরন্যে আর রানির পাশে রেখে দেয় কাঠের পুতুল।রাগে দুঃখে বাদশাহ বিবি হেরেমকে পাঠান বনবাসে আর বনারণ্যে বেড়ে ওঠে বাদশা তনয় হরমুজ...

কচি কুমড়োলতা, মাচায় ঝোঁলা নধর লাউ, সবুজ করলা, টুকটুক করে মাথা দোলানো বেগুন- এমন ‘দেশীয়’ আবহের মাঝে দর্শকরা মাটিতে পাটি বিছিয়ে বসে তন্ময় হয়ে দেখছিল এই যাত্রাপালা। এই পালার অভিনয়ে ছিলেন কাজী পিয়াল, হাসান মামুন, সামিয়া রিন ও রাফিয়া মাহজাবিন।

লোকনৃত্য পরিবেশনায় ছিলেন আয়ুশি, নেফারতিতি এবং প্রমা। আর লোকসঙ্গীত পরিবেশন করে আরশি ও তাসফিয়া।গিটারে ছিলেন সবুজ মজুমদার আর কিবোর্ডে ছিল রাভির নৈপুণ্য ।

গ্রেটার ভ্যাঙ্কুভারের পরিচিত নাট্যব্যক্তিত্ব এবং আয়োজনের প্রধান উদ্যোক্তা কাজী পিয়াল জানান মূলত প্রবাসীদের ভেতরে বাঙালি চেতনাবোধ এবং এখানে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার লোকসংস্কৃতিকে তুলে ধরা এবং নানা ভাষা নানা সংস্কৃতির এই দেশে আমাদের লোকসংস্কৃতিকে পরিচিত করিয়ে দেওয়াই এই মেলার লক্ষ্য।

গতবছর প্রথম অনুষ্ঠিত হয় লোকমেলা। এবছর তাই প্রবাসীদের মধ্যে একধরনের আগ্রহ ছিল এই আয়োজনকে ঘিরে। আগামী দু’এক বছরের মধ্যে মেলার পরিধি আরও বাড়বে বলে আয়োজকরা আশা করছেন।

লোকমেলায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আসা টেলিভিশন এবং মঞ্চ অভিনেতা খুরশিদুজ্জামান উৎপল।তিনি বলেন, “প্রবাস জীবনের নানা নৈরাশ্য, যন্ত্রণা একপাশে সরিয়ে রেখে সকলের এমন স্বতস্ফূর্ততা দেখে মনটা ভরে গেল।বিশেষ করে বাচ্চাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।এই ধারা সঞ্চারিত হোক সকলের মধ্যে।”

প্রবাস জীবনের গল্প ও অভিজ্ঞতা এখন থেকে আমাদের সরাসরি জানাতে পারেন। পুরো নাম ও সংশ্লিষ্ট ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায়  probash@bdnews24.com