তারুণ্যে ভর করে মেয়র হতে চান নাছির

তিন দশক আগে ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন তিনি, পরে তার মূল পরিচিতি হয়ে ওঠে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে।

মিঠুন চৌধুরীমিঠুন চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2015, 12:00 PM
Updated : 12 March 2015, 12:00 PM

দুই বছর আগে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর আ জ ম নাছির উদ্দিন এখন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করতে চান।

নাছির উদ্দিন মনে করেন, তিনি প্রার্থী হলে তরুণ প্রজন্ম তাকে শতভাগ সমর্থন দেবে। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার পাশাপাশি ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে দল-মত নির্বিশেষে সবার সঙ্গে সম্পর্ককেই ভোটে তাকে এগিয়ে রাখবে।

আগামী জুন মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ইঙ্গিত নির্বাচন কমিশন দেওয়ার আগেই মেয়র পদে নির্বাচন করতে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন গত শতকের ‘৮০ এর দশকের এই ছাত্রনেতা।

আওয়ামী লীগ থেকে নগর কমিটির সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং নগর কমিটির কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামও নির্বাচনে আগ্রহী।

বিভিন্ন সময় নানা পদে থাকলেও কখনও কোনো নির্বাচনে অংশ নেননি আ জ ম নাছির।

আশির দশকের শুরুতে চট্টগ্রাম ছাত্রলীগে সক্রিয় নাছির ১৯৭৮ ও ১৯৮১ সালে দুই দফায় নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮১ ও ১৯৮৩ সালে দুইবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিও হন।

১৯৮৫ সালে চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন যাত্রা শুরু করলে এর প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক হন নাছির। ২০০৩ সালে সিজেকেএসের সহ-সভাপতি ও ২০১১ সালে সাধারণ সম্পাদক হন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক নাছির ক্রিকেট কমিটি অফ ঢাকা মেট্রোপলিটনেরও চেয়ারম্যান।

মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে নাছির উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দীর্ঘ প্রায় চার দশক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মানব কল্যাণে কাজ করেছি। পাশাপাশি ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে দল-মত নির্বিশেষে সবার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

“নগরীর আদি বাসিন্দাদের মধ্যে একটা সেন্টিমেন্ট আছে। আগে যারা এ পদে নির্বাচিত হয়েছেন তারা কেউ নগরীর আদি বাসিন্দা নয়।“

তরুণদের সমর্থন নিজের মূল শক্তি উল্লেখ করে নাছির বলেন, “ছাত্র রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলাম। মনোনয়ন পেলে তরুণ প্রজন্ম সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে আমার জন্য কাজ করবে। এতে ভোটারদের মোটিভেট করা সহজ হবে।”

মেয়র নির্বাচিত হলে বিরাজমান সমস্যা সমাধান করে আধুনিক দৃষ্টিনন্দন পরিচ্ছন্ন ও জনবান্ধব নগরী হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি।

এই নির্বাচনে প্রার্থী এখনও ঠিক করেনি আওয়ামী লীগ। গত বছর চট্টগ্রাম সফরের সময় শেখ ‍হাসিনা স্থানীয় নেতাদের এই দায়িত্ব দিলেও বুধবার দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রামে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীই প্রার্থী ঠিত করবেন।

গত বছর স্থানীয় নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্যের বিষয়ে নগর সাধারণ সম্পাদক নাছির বলেন, “নেত্রী সেদিন হেসে উত্তর দিয়েছিলেন। তিনি সেটা মিন করেননি। এ কারণে কেন্দ্র থেকে এখনও কোনো নির্দেশনা আসেনি।

“আমার কাছে এমন তথ্যও আছে, আমরা যেন অতিউৎসাহী হয়ে কিছু না করি। এতে দলে বিভ্রান্তি, চাপ বা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে। কেন্দ্র থেকে নির্দেশ এলেই এ বিষয়ে বসব, অন্যথায় নয়।”

রাজনৈতিক গুরু মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিষয়ে মতামত জানতে ‍চাইলে নাছির বলেন, “তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। গতবার নির্বাচনে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপর্যয় হয়।

“এবার একটা কঠিন সময়ে নির্বাচন হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেকদিক বিবেচনা করে যথাসময়ে প্রার্থী ঘোষণা করবেন। দল দিলে উনি (মহিউদ্দিন) নির্বাচন করবেন। তখন আমিও তাকে শতভাগ সমর্থন করব।”

আবদুচ ছালামের বিষয়ে তিনি বলেন, “উনি (ছালাম) কোষাধ্যক্ষ। কিন্তু সাংগঠনিক কাজে অংশ নেন না। এটা দলে বিভক্তি তৈরি করতে পারে। অনুমতি না নিয়ে দলের ব্যনারে অনুষ্ঠান করায় একবার (২০১৩ সালে) এবং দলের সদস্য কয়েকজন কাউন্সিলের ছবি ব্যবহার করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ায় গত বছর তাকে নোটিস দেওয়া হয়।”

“যে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে পারেন। কিন্তু এ কারণে সংগঠনে যেন বিভাজন তৈরি না হয়,” বলেন নগর সম্পাদক নাছির।