এইচ টি ইমামকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ সুরঞ্জিতের

গত নির্বাচনে পুলিশ বাহিনীতে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ভূমিকা ও সরকারি চাকরি নিয়ে বক্তব্যের কারণে সমালোচনার মুখে থাকা প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে ভবিষ্যতে আরো ‘সতর্ক’ হয়ে কথা বলার পরামর্শ দিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2014, 09:09 AM
Updated : 14 Nov 2014, 09:09 AM

শুক্রবার এক আলোচনা সভায় ক্ষমতাসীন দলের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, “পত্রিকায় দেখলাম আমাদের এক উপদেষ্টা পাবলিক সার্ভিস কমিশন সম্পর্কে কথা বলেছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে পাবলিক সার্ভিস কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এখানে সবারই পরীক্ষা দেওয়ার সমান সুযোগ আছে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পাস করার সমান সুযোগ আছে। সুতরাং এ বিষয়ে কথা বলতে হলে একটু সতর্ক হতে হবে আমাদের।”

গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে এইচ টি ইমাম বলেন, “ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা প্রতিষ্ঠিত হতে চায়, তাদের চাকরিসহ যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। আমি প্রয়োজনে কোচিং ক্লাস নিতে রাজি আছি। তারপরে আমরা দেখব, আগে নয়।”

ফাইল ছবি

গত নির্বাচনের আগে পুলিশ প্রশাসনে সরকার সমর্থকদের ভূমিকা নিয়েও ওই অনুষ্ঠানে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “আমি নিজে অনেক উপজেলায় গিয়েছি। সেখানে আমাদের যারা ছিল, তাদের সঙ্গে কথা বলে নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে আছে। তারা বুক পেতে দিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের হামলায় পুলিশের ১৯ জন প্রাণ দিয়েছে।”

এইচ টি ইমামের ওই বক্তব্যের সমালোচনায় বিএনপি বলে আসছে, তার ওই কথাই সরকারের দলীয়করণের প্রমাণ।

রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী আয়োজিত আলোচনায় সুরঞ্জিতও সমালোচনায় যোগ দেন।

তিনি বলেন, “পুলিশবাহিনী রাষ্ট্রের। কোনো নির্দিষ্ট দল কিংবা গোষ্ঠীর নয়। এরা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করবে।

“৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কোনো ব্যক্তিবিশেষ বা বাহিনীবিশেষের ভূমিকায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসেনি। আমরা জনসমর্থনের ওপর ভিত্তি করেই নির্বাচন করেছি এবং জয়যু্ক্ত হয়েছি। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করি বলেই জনগণ আমাদের পুনরায় ক্ষমতায় এনেছে।”

দেশের বাইরে অবস্থানরত যুদ্ধাপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র দপ্তরকে আরো সক্রিয় হওয়ারও আহ্বান জানান ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।

“যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়ার পর বাচ্চু রাজাকার, খোকন রাজাকার দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে। তাদের ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ে সকল রকম কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির আহ্বান জানাই।

“আমাদের বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে বোঝাতে হবে, এরা সাধারণ অপরাধী নয়, এরা যুদ্ধাপরাধী। এদের আপনারা আপনাদের দেশে আশ্রয় দিতে পারেন না।”

কিশোরগঞ্জে সাম্প্রতিক এক জনসভায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে কটাক্ষ করে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা সুরঞ্জিত বলেন, “তিনি এখন বোমা-গ্রেনেড রেখে ঢাল তলোয়ার হাতে নিয়েছেন। কবে হয়ত দেখব যে ঢাল তলোয়ার ফেলে তীর-ধনুক তুলে নেবেন। পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে যে আন্দোলনে নামার চাইতে তার চিকিৎসার প্রয়োজন বেশি।”

সকল ‘হতাশা কাটিয়ে’ বিএনপি আবার ‘মূলধারার রাজনীতিতে’ ফিরে আসবে, সাংবিধানিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

অন্যদের মধ্যে সাংসদ হাজি সেলিম, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন চৌধুরী, নৌকা সমর্থক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মিজি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।