এরশাদের ‘রহস্যময়’ অনুপস্থিতি

জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় অনুপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ, আর এনিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য এসেছে নেতাদের কাছ থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2014, 11:00 AM
Updated : 19 Jan 2014, 03:16 PM

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার দুপুরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।

তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ ২৭ জনের একটি দল।

কিন্তু সেই দলে অনুপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এরশাদ, ছিলেন না সংসদ সদস্য ও দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারও।

এরশাদের অনুপস্থিতির বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে রওশন বলেন, “পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় তারা আসতে পারেননি।”

কী কাজে ব্যস্ত ছিলেন তারা- জানতে চাইলে ফিরোজ রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য সাক্ষাৎকার নেয়ায় ব্যস্ত রয়েছেন এরশাদ।

একই প্রশ্ন করা হলে সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য অভিনেতা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার কাছ থেকে উত্তর পাওয়া যায় এই রকম- “দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্র থেকে রোববার পর্যন্ত ফরম বিক্রি হবে, তারপর সোমবার প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার। তিনি (চেয়ারম্যান) প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেবেন আগামীকাল।”

তাহলে অনুপস্থিতির কারণ কী- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এটা আমাদের কাছেও একটা মিস্ট্রি (রহস্য)। তিনি তো নির্বাচিত প্রতিনিধি। সুতরাং সংসদীয় দলের মধ্যে তো তার এবং মহাসচিবের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।”

এরশাদ অসুস্থ কি না- জানতে চাইলে মাসুদ পারভেজ বলেন, “না, তিনি অসুস্থ নন।”

এদিকে জাতীয় পার্টির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম সৌরভ দাবি করেছেন, সংসদীয় দলের আমন্ত্রণই পাননি এরশাদ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্যার (এরশাদ) কিভাবে যাবেন? স্যার এবং মহাসচিবকে তো জানানো হয়নি যে সংসদীয় দল আজ সাভারে যাচ্ছেন।

“আপনারা জাতীয় পার্টি ফলো করেন, আপনারা তো বুঝতেই পারেন, দলের সিদ্ধান্ত এখন কোনখান থেকে আসে।”

নানা নাটকীয়তার পর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৩৩টি আসনে জয়ী হয় জাতীয় পার্টি। তবে ডিসেম্বরের শুরু থেকে নির্বাচন হয়ে যাওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন এরশাদ। এরপর বাড়ি ফিরলেও সাংবাদিকদের সামনে আসেননি তিনি।

এরশাদের অনুপস্থিতিতে রওশন জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হয়ে বিরোধীদলীয় নেতাও হয়েছেন।

রওশনের দাবি, এরশাদের সম্মতিতেই সব কিছু হয়েছে; তবে সংবাদ মাধ্যমে আলোচনা চলছে যে জাতীয় পার্টিতে দ্বন্দ্ব চলছে। 

এই বিষয়ে স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এরশাদের স্ত্রী রওশন বলেণন, “তার সাথে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই।”