সমঝোতা হলে ব্যবস্থা: হাসিনা

বিএনপিহীন নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমঝোতা হলে গণতন্ত্র রক্ষায় ‘যে কোনো’ ব্যবস্থা তিনি নেবেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2014, 11:34 AM
Updated : 12 Jan 2014, 01:30 PM

শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন ৪৯ সদস্যের মন্ত্রিসভা রোববার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছ থেকে শপথ নেয়। এরপর বঙ্গভবনের লনে আয়োজিত চা চক্রে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হন তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।

নির্বাচনের আগেই হাসিনা বলেছিলেন, দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে সমঝোতা হলে প্রয়োজনে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেবেন তিনি। শপথ নেয়ার পর এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।

উত্তরে বিএনপির আন্দোলনে দেশজুড়ে সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় যে প্রতিন্ধকতা তারা সৃষ্টি করছে, সেটা বন্ধ করতে হবে। এরপর সমঝোতা।

“সমঝোতা হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে যে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে।”

সময় হলে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার কথা ভাববেন- খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শেখ হাসিনা বলেন, “উনার মনে কি আছে সেটা উনিই বলতে পারবেন।”

বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠান ও সরকার গঠনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কোনো চাপের মুখোমুখী পড়তে হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, “জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো ধরনের চাপের কাছে শেখ হাসিনা মাথা নত করে না।”

শেখ হাসিনা আবারো বলেন, বিএনপি নেত্রী নির্বাচনে না এসে ‘যে ভুল’ করেছেন- তা তিনি এখন বুঝতে পারছেন।

“আমি জানি না উনাদের কে পরামর্শ দেন। তবে তিনি ভুল বুঝতে পেরেছেন।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার প্রত্যাশা ছিল বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে।

“অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করতে তাদের যে দায়িত্ব তারা তা পালন করেনি। যদি আসত, তাহলে গণতন্ত্রের ভিত্তি আরো দৃঢ় হতো।”

তিনি বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসনসহ সব রাজনৈতিক দলকে আমি সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলাম। তিনি সাড়া না দিয়ে আলটিমেটাম দিয়েছেন। তিনি সংঘাতের পথ বেছে নিলেন, যেটা দুর্ভাগ্যজনক।”

আরেকবার সরকার গঠনের সুযোগ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী ভোটারদের ধন্যবাদ জানান এবং নির্বাচনের পর বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।

সেসব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচন বানচালের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে যেসব দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।”

নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে আসা হাসিনা বলেন, তার নতুন সরকার ‘জাতীয় ঐকমত্য’ সৃষ্টি করতে কাজ করবে।

বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রিসভায় সদস্য করা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা রসিকতা করে বলেন, “আপনাদের স্মৃতি দুর্বল। আপনাদের মনে রাখা দরকার ৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছিলো তখনও বিরোধী দল থেকে মন্ত্রী করা হয়েছিল। আমিই সে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিলাম।”