হরতালের ডাক, ভাংচুর-আগুন

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝোলানোর প্রতিবাদে বিজয় দিবসের আগের দিন রোববার সারাদেশে হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2013, 04:34 PM
Updated : 13 Dec 2013, 06:19 AM

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় নামে দলটির কর্মীরা।

সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। কুমিল্লায় সংঘাতে নিহত হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক কর্মী।

দিনাজপুরে আগুন দেয়া হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্যের বাড়ি ও পেট্রোল পাম্পে। এছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালী, জয়পুরহাট,  গাইবান্ধা, নারায়ণগঞ্জে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।

দুপুরে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায় পর্যালোচনার আবেদন আপিল বিভাগে খারিজ হওয়ার পর জামায়াতের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “কাদের মোল্লার প্রতি ফোঁটা রক্তের জন্য আওয়ামী লীগকে জবাব দিতে হবে।”

এরপর রাত ১০টা ১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরপরই বিবৃতিতে হরতালের কর্মসূচি দেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল হোসেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান অগ্রাহ্য করে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে আব্দুল কাদের মোল্লাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।

“আব্দুল কাদের মোল্লার রক্তে রঞ্জিত বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের জনগণ এ হত্যার বদলা নেবে,” বলেন তিনি।

হত্যা-ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত কাদের মোল্লাকে ‘শহীদ’ অভিহিত করে জামায়াত আমির বলেন, “সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার তাকে হত্যা করে নিজেদের রাজনৈতিক মৃত্যু ডেকে এনেছে।

“তার প্রতি ফোঁটা রক্ত তার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেকের জন্য অভিশাপ বয়ে আনবে। তাদের ধ্বংস অনিবার্য। তাদের করুণ পরিণতি দেশবাসী অতি শিগগিরই প্রত্যক্ষ করবে।”

কাদের মোল্লাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বিচারে সাজা দেয়া হয়েছে দাবি করে এর প্রতিবাদে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান জামায়াত আমির।

হরতালের আগে শুক্রবার সারাদেশে গায়েবানা জানাজার কর্মসূচিও ঘোষণা করেন মকবুল আহমদ।

১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আব্দুল কাদের মোল্লার জন্য দোয়া অনুষ্ঠানের কর্মসূচিও দিয়েছে দলটি, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের জন্য যে দলটির নেতারা ইতোমধ্যে দণ্ডিত হয়েছেন।

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার কর্মসূচিও দিয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটি।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব নেতার দণ্ড হলেও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডই প্রথম কার্যকর হল।

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রতিক্রিয়ায় কাদের মোল্লার আইনজীবী তাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না, এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। এটা নিয়ে গোটা দুনিয়াবাসী কথা বলেছে। ইতিহাস একদিন এর বিচার করবে।”

কাদের মোল্লা ‘নির্দোষ’ ছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, “আইনি প্রক্রিয়ায় থেকে আমি সেটা বুঝেছি। মনে প্রাণেও আমি সেটা বিশ্বাস করি।”