মঙ্গল ও বুধবার টানা ৪৮ ঘণ্টার এই হরতাল শুরুর আগে দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান।
ঈদের ছুটির পরপরই জামায়াতের ডাকা এই হরতালের সমালোচনা করে আসছেন সরকারি দলের নেতারা।
গত ১ অগাস্ট হাই কোর্টের রায়ের পর ১২ ও ১৩ অগাস্ট হরতালের ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াত। পরে হরতাল পিছিয়ে ১৩ ও ১৪ অগাস্ট করা হয়।
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হরতাল দেয়ায় হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ ইতোমধ্যে রফিকুল এবং দলের প্রচার বিভাগের মো. ইব্রাহিমকে তলব করেছে।
তাদের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তার কারণ জানাতে তাদের আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর হাজির হতে বলা হয়েছে।
রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে হরতালের ঘোষণা দেয়া হলেও হরতাল সফলের আহ্বান জানিয়ে রোববারের বিবৃতিতে কর্মসূচির কারণ হিসেবে এর উল্লেখ করা হয়নি।
বিবৃতিতে রফিকুল বলেন, “জামায়াতের কারাবন্দি শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করা ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা সংবিধানে পুনর্বহাল করার দাবি না মেনে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার নীল নকশার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ঘোষিত লাগাতার ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য আমি সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”
বিবৃতির শিরোনামেও বলা হয়, সরকারের জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন, গণগ্রেপ্তার ও জামায়াতে ইসলামীকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে হরতাল সফলের জন্য রফিকুল ইসলাম খান এই বিবৃতি দিয়েছেন।
একটি রিট আবেদনে হাই কোর্টের দেয়া রায়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনে ২০০৮ সালে পাওয়া জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ।
রায় প্রত্যাখ্যান করে হরতাল আহ্বান করে বিবৃতিতে তখন জামায়াত বলেছিল, এটি একটি ‘ভুল’ রায়। এ রায়ের মাধ্যমে সরকারের ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের’ প্রতিফলন ঘটেছে।
রায়ের বিরুদ্ধে কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণাও দেয়া হয়েছিল তখনকার বিবৃতিতে।
এই রায়ের ফলে জামায়াত আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে ইসির কৌঁসুলি শাহদীন মালিক জানিয়েছেন।
তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে আপিল করে শাহদীন মালিকের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত জানান জামায়াতের কৌঁসুলি ও দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
হাই কোর্টের রায়ের পরপরই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। মিছিল থেকে গাড়ি পোড়ানো, ভাংচুর ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এরপর হরতালের ঘোষণা আসে।
হরতাল সফলের বিবৃতিতে ঈদুল ফিতরের সময়ে সীতাকুণ্ডে দুই জামায়াতকর্মীর নিহতের ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়।
সেইসঙ্গে ঈদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান থেকে জামায়াত-শিবিরের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দাবি করে এর নিন্দা জানানো হয়।