রায় দেখে ব্যবস্থা: ইসি

জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাই কোর্টের রায় দেখে ‘দ্রুত’ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2013, 09:26 AM
Updated : 1 August 2013, 11:17 AM

বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দেয়ার পরই এই প্রতিক্রিয়া জানায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ ইসি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আদালতের আদেশ শিরোধার্য। রায়ের কপি হাতে পেলেই আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।”

এর কিছুক্ষণ পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, “রায়ের কপি হাতে পেয়ে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”

ইসি নিবন্ধন বাতিল করলে জামায়াত রাজনৈতিক দল হিসেবে সক্রিয় থাকতে পারলেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

আগামী নির্বাচনের আগে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হবে কি না- জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “এসব বিষয়ে রায় দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর ৩৭টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জামায়াতকেও নিবন্ধন দেয় ইসি।

তবে একাত্তরে স্বাধীনতাবিরোধী অবস্থানের কারণে এই দলটির নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন দল ও সংগঠন।

তাদেরই মধ্য থেকে কয়েকটি ইসলামী দল জামায়াতের নিবন্ধন চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করে। বৃহস্পতিবার তার রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা দেয় আদালত।

নির্বাচন কমিশন যেহেতু জামায়াতকে নিবন্ধন দিয়েছে, সেহেতু হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে ইসি আপিল করবে কি না- জানতে চাইলে সিইসি আবারো বলেন, রায়ের অনুলিপি হাতে পেয়ে তারপর এসব বিষয়ে চিন্তা করবেন তারা।

রায়ের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আপিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির অন্যতম জোট শরিক এই দলটি দাবি করে আসছে, তাদের নিবন্ধন বাতিল ‘ষড়যন্ত্রের’ অংশ।

হাই কোর্টের সংক্ষিপ্ত রায়ে বলা হয়, “বাই মেজরিটি, রুল ইজ মেইড অ্যাবসিলিউট অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশেন গিভেন টু জামায়াত বাই ইলেকশন কমিশন ইজ ডিক্লিয়ার্ড ইলিগ্যাল অ্যান্ড ভয়েড।”

রায়ের বিস্তারিত পরে প্রকাশ করা হবে বলেও আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

হাই কোর্টের এই রায়ের আগেই যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে রায়ে জামায়াতকে একাত্তরের ‘ক্রিমিনাল’ দল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওই রায় ধরে জামায়াতকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার দাবিও রয়েছে বামপন্থী বিভিন্ন দল ও রাজনৈতিক সংগঠনের।  গণজাগরণ মঞ্চ থেকেও এই দাবি তোলা হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এনিয়ে পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি।

তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবেদনটি করেন।

এরপর আদালতের রুলে জানতে চাওয়া হয়, একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে নির্বাচন কমিশনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি(১)(বি)(২) ও ৯০(সি) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না?

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী তানিয়া আমীর বলেছিলেন, “জামায়াতের গঠনতন্ত্র দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই দল নিবন্ধন পাওয়ারই যোগ্য ছিল না।”

অন্যদিকে জামায়াত নেতাদের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যুক্তি দেখান, অসৎ ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ এ রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। জামায়াতের গঠনতন্ত্রে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু নেই।