‘তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে চুদুরবুদুর চইলত ন’

নিদর্লীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 June 2013, 07:38 AM
Updated : 9 June 2013, 07:55 AM

“তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়া কোনো চুদুরবুদুর চইলত ন,” ফেনীর বাসিন্দা রেহানা তার অঞ্চলের ভাষায় সরকারকে হুঁশিয়ার করেন।

রোববার সংসদ অধিবেশনে রেহানা পদ্মা সেতু প্রকল্পে ‘দুর্নীতিতে’ প্রধানমন্ত্রীর পরিবার জড়িত বলেও দাবি করেন।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের এই সংসদ সদস্যের বক্তব্য নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন।

রেহানা আক্তারের বক্তব্য ‘অশোভন’ দাবি করে তা কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিতেও আহ্বান জানান সরকারি দলের হুইপ আ স ম ফিরোজ।

এরপর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ওই বক্তব্য পরীক্ষা করে ৩০৭ বিধি অনুযায়ী কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেয়া হবে।

বিরোধী দলের দুই সংসদ সদস্য রেহানা ও সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়ার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে স্পিকার সংসদ সদস্যদের শালীন ভাষায় কথা বলার আহ্বান জানান।

রেহানার আগে আশিফা আশরাফীর বক্তব্য নিয়েও সংসদে উত্তেজনা দেখা দেয়।

সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় রেহানা দাবি করেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে ‘দুর্নীতিতে’ প্রধানমন্ত্রীর পরিবার জড়িত ছিলো।

 “পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য টিফিনের টাকা নেয়া হলো, চাঁদাবাজি করা হলো। সেই চাঁদাবাজির টাকার ভাগ নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ মারামারিতে রাজশাহীতে একজন খুন হলো।”

“পদ্মা সেতু তৈরির আগেই ১২ পারসেন্ট কমিশন দেয়ার কথা ফাঁস হওয়ার পর বিশ্ব ব্যাংক ঋণচুক্তি ঘ্যাচাং করেছে। ১০ পারসেন্টের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলো। তাদের নাম পত্রিকায় এসেছে। দুই পারসেন্টের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের নাম পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি।”

“সম্প্রতি কানাডিয়ান টেলিভেশনের প্রতিবেদনে ওই দুই পারসেন্ট কমিশনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা জড়িত বলে বলা হয়েছে।”

বক্তব্যের এই পর্যায়ে রেহানাকে সম্পূরক বাজেট নিয়ে বক্তব্য দেয়ার অনুরোধ জানান স্পিকার।

রেহানা বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, “চারিদিকে দমবন্ধ করা পরিবেশ, দমবন্ধ করা মানুষের আর্তনাদ।
যখন এই সরকারের পতন হবে তখন মানুষ স্বস্তির আকাশে মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলবে।”
একদলীয় নির্বাচন যেন না হয়, সেজন্য স্পিকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেন, “কেউ বলছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হবেন। আর, বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আপনি নাকি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হবেন।”
তারেক রহমানকে নিয়ে সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের নেতা(তারেক রহমান) যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেছেন, তখন অনেক মন্ত্রীর পেট খারাপ হয়ে গেছে।”
তারেককে ইন্টারপোলের মাধ্যমে আনার উদ্যোগকে ‘সরকারের রাজনৈতিক শয়তানি এবং ডিজিটাল পাগলামী’ বলে আখ্যায়িত করেন রেহানা।

“তারেক রহমানের পেছনে সময় ব্যয় না করে নিজেদের চামড়া বাঁচানোর কাজে ব্যয় করুন। আমাদের কথা বাদ দিলাম, জামায়াত আর হেফাজতের সঙ্গে যা করেছেন, আপনাদের খবর আছে। পিঠের চামড়া থাকবে না, বলে দিলাম।”

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে প্রচার মাধ্যমের ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’ উল্লেখ করে তিনি বলেন,  “আজ বন্দুকের নল আর পুলিশের লাঠি দিয়ে মিডিয়ার লোকদের নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।”

গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী আহমদ রাজীব হায়দারের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার প্রসঙ্গ ধরে বিরোধী সংসদ সদস্য বলেন, ‘নৌকা মার্কার ভোটার বিশ্বজিতের বাড়িতে না গেলেও রাজীবের বাড়িতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নাস্তিকদের উস্কানিদাতা।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তার শরীরে গরম ডিম ঢুকিয়ে দিয়েছিলো। তাদের বিচার না করে আপনি কেন বিএনপি নেতাদের ডাণ্ডাবেড়ি পড়াচ্ছেন।”