সিপিবি ভবনে আগুন দিলো হেফাজত

মতিঝিলের সমাবেশমুখী হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুরানা পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ভবনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2013, 06:00 AM
Updated : 5 May 2013, 05:24 PM

হেফাজতের আড়ালে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা এই হামলায় ছিলো বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর দাবি করেছেন।

জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে সিপিবি। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার পর বিভিন্ন জেলায় প্রতিবাদ মিছিল করেছে দলটি।

হামলার তাক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গণতান্ত্রিক সংগ্রাম ও স্বাধিকার আন্দোলনের সাথে যুক্ত এই দলের (সিপিবি) প্রতি এই স্বাধীনতাবিরোধীদের  (হেফাজত) প্রতি আক্রোশ থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

“তাদের এই ফ্যাসিস্ট চরিত্র তারা আবার প্রকাশ করে দিলো।”

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সক্রিয় সিপিবির ওপর গণজাগরণবিরোধী হেফাজতের হামলার নিন্দা জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

রোববার সকাল থেকে ঢাকা অবরোধের পর দুপুরে বিভিন্ন স্থান থেকে মতিঝিলের দিকে মিছিল নিয়ে রওনা হয় হেফাজতকর্মীরা।

পৌনে ২টার দিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে দিয়ে একটি মিছিল যাওয়ার সময় কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এরপরই সংঘর্ষ বেঁধে যায়, যাতে পল্টন পর্যন্ত এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুরানা পল্টনে সিপিবির ভবনে (মুক্তি ভবনে) হামলা চালায় হেফাজতের একদল কর্মী।

ওই ভবনের ওপরে সিপিবির কার্যালয়, নিচে দোকান রয়েছে।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হেফাজতকর্মীরা প্রথমে ফুটপাতের দোকানগুলোতে আগুন দেয়। এরপর মুক্তি ভবনের ভেতরে ঢুকে নিচ তলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত সব দোকান ও বিভিন্ন অফিস ভাংচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।

সিপিবি নেতা বলছেন, ভবনের একটি ফটকও বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা এবং তারা জেনেই এই হামলা চালিয়েছে।

তবে বেশ কয়েকটি ফটকের কারণে সিপিবির কার্যালয় পর্যন্ত হামলাকারীরা উঠতে পারেনি।

আগুন দেয়ার খবর শুনে অগ্নিনির্বাপক বাহিনী গেলেও পুলিশের সঙ্গে হেফাজতের কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষের কারণে তারা কাজ করতে পারেনি।

অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর একটি গাড়ি তখন পল্টন এলাকায় যায়। গাড়িতে থাকা মহসিন নামে এক কর্মী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেখানে যাওয়াই যাচ্ছে না।”

রাত ৮টার দিকে পুলিশ দৈনিক বাংলা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ নিলে অগ্নিনির্বাপন বাহিনী কাজ শুরু করে।  

আগুন নেভানোর পর দেখা যায়, সিপিবি কার্যালয়ের তিন তলা পর্যন্ত আগুন দেয়া হয়েছিল। ভবনের নিচে থাকা ছয়টি গাড়িও পুড়িয়ে দেয়া হয়।