‘ক্রান্তিলগ্নে সঠিক নেতৃত্ব দেবেন হামিদ’

দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আবদুল হামিদের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন, ক্রান্তিলগ্নেও তিনি দেশকে সঠিক পথে নেতৃত্ব দেবে।   

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2013, 07:05 AM
Updated : 21 April 2013, 07:18 AM
রোববার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পর হুইপ আ স ম ফিরোজের নেতৃত্বে দলের চার নেতা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে চারটি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।

সংসদ ভবনে স্পিকারের কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ফরমে সই করার পর বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কাছে তিনটি ফরম জমা দেয় আওয়ামী লীগের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আবদুল হামিদ ‘যোগ্য’ ব্যক্তি এবং সবার কাছে ‘গ্রহণযোগ্য’। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মহল বক্তব্য-বিবৃতিতে তার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে।

“তিনি অত্যন্ত দক্ষ। নীতির প্রশ্নের কখনো আপস করেননি। তিনি হচ্ছেন নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ।”

সংসদের ডেপুটি স্পিকার, দুই দফায় স্পিকার এবং বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসাবে আবদুল হামিদের দায়িত্ব পালন এবং বিভিন্ন সময়ে দেশের ক্রান্তিকালে তার ভূমিকার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তোফায়েল।

এর আগে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার সময় আ স ম ফিরোজ সাংবাদিকদের বলেন, “এমন একজন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতির জন্য মনোনয়ন করেছি যিনি দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদ, দলমত নির্বিশেষে তিনি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে তিনি দেশকে সঠিক পথে নেতৃত্ব দেবেন। তার জন্যে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।”

তোফায়েল জানান, গত ১৯ এপ্রিল প্রথা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভায় রাষ্ট্রপতি পদে আবদুল হামিদের মনোনয়নের প্রস্তাব আসে। রোববার সংসদীয় দলের সভায় সংসদ নেতা শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সর্বসস্মতভাবে তা চূড়ান্ত করা হয়।

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অস্থায়ী রাষ্ট্রপতিকে এ মনোনয়নের কথা জানালে আবদুল হামিদ তাতে সম্মতি দেন।”

আবদুল হামিদের নামে যে তিনটি মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে একটিতে প্রস্তাবক হিসাবে সৈয়দ আশরাফ ও সমর্থনকারী হিসাবে তোফায়েল আহমেদের নাম রয়েছে।

এছাড়া প্রধান হুইপ আবদুস শহীদ ও আ স ম ফিরোজ প্রস্তাবক হয়ে বাকি দুটি মনোনয়ন পত্র জমা দেন, যাতে সমর্থনকারী হিসাবে আবদুল মতিন খসরু ও সেগুফতা ইয়াসমিন এমিলির নাম রয়েছে।  

রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের অসুস্থতার কারণে গত ১১ মার্চ অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পান আবদুল হামিদ। জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন, যাতে সোমবার মনোনয়ন বাছাই, বুধবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ২৯ এপ্রিল ভোটের দিন রাখা হয়।

তবে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় আবদুল হামিদকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণার বিষয়টি এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিবউদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের  পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দেয়া হবে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে শপথ নেওয়ার পর স্পিকার ও তার সংসদীয় আসন শূণ্য হবে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “এরপর সাত দিন সময় পাব আমরা। ওই সময়ে এ বিষয়গুলো নিয়ে দলে আলোচনা হবে।”

বিরোধী দল সংসদে এলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়ে কথা হতে পারতো মন্তব্য করে বিরোধী দলকে ‘রাজপথের সহিংসতা’ ছেড়ে সংসদে আসার আহ্বান জানান তোফায়েল।