২১ অগাস্ট মামলায়ও তারেকের বিচার শুরু

২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায়ও অভিযুক্ত হয়েছেন তারেক রহমান। এর মধ্য দিয়ে এই মামলায় তার বিচার শুরু হল।

প্রকাশ বিশ্বাসপ্রকাশ বিশ্বাস জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2012, 00:19 AM
Updated : 20 August 2018, 10:51 AM

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ এজলাসে রোববার বিচারক মো. শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেকসহ নতুন ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়।

আদালত এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ২৮ মার্চ দিন ঠিক করেছে।

খালেদা জিয়ার ছেলে, বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেকের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারের একটি মামলার বিচার চলছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে ডজন খানেক মামলা।

২১ অগাস্ট মামলায় তারেককে পলাতক দেখিয়েই অভিযোগ গঠন হল। তিনি সাড়ে তিন বছর ধরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় দলের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ’ আহত হন।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এই মামলায় ২২ আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরু হলেও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর আদালতের আদেশে এই মামলার অধিকতর তদন্ত হয়। এতে আসামির তালিকায় যোগ হন তারেকসহ ৩০ জন।

এরপর আসামিদের অনেকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করলে দীর্ঘদিন ধরে আবেদনগুলোর শুনানি চলে। সব আবেদন খারিজ করে রোববার অভিযোগ গঠন হল।

এই মামলায় অভিযোগ গঠনের ফলে এখন তারেকের পাশাপাশি বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, বিএনপির সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, ঢাকার কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম আরিফ।

এছাড়াও অভিযুক্ত হয়েছেন- জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা- এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার ও আব্দুর রহিম, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এ টি এম আমিন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বখশ চৌধুরী, সাবেক ডিসি (পূর্ব) মো. ওবায়দুর রহমান, সাবেক ডিসি (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, অবসরপ্রাপ্ত এএসপি আব্দুর রশিদ, অবসরপ্রাপ্ত এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান, বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন।

এছাড়া হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. হানিফ, মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, মো. আব্দুল মাজেদ বাট ইউসুফ, আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ, আব্দুর রউফ ওরফে আবু ওমর হোমায়রা, আব্দুল হান্নান সাব্বির, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, রাতুল বাবুও অভিযুক্ত হয়েছেন।

আগের ২২ জন আসামির মধ্যে হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু রয়েছেন।

এই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। হত্যামামলায় নতুন আসামিদের সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হলেও বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তারা মধ্যে রয়েছেন- খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউক, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এ টি এম আমিন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বখশ চৌধুরী, সাবেক ডিসি (পূর্ব) মো. ওবায়দুর রহমান, সাবেক ডিসি (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসানঅবসরপ্রাপ্ত এএসপি আব্দুর রশিদ, অবসরপ্রাপ্ত এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান ও বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন।

নতুন ৩০ জনকে আসামির তালিকায় যোগ করে গত বছরের ৩ জুলাই মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ সুপার আব্দুল কাহহার আকন্দ। ফলে আলোচিত এ মামলার আসামির সংখ্যা ৫২ জনে দাঁড়িয়েছে।

বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময় এ মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। কয়েকজন তদন্ত কর্মকর্তার হাত ঘুরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালের ১১ জুন সিআইডি কর্মকর্তা ফজলুল কবীর ২২ জনকে আসামি করে দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

পরে রাষ্ট্র্রপক্ষের আবেদনে ২০০৯ সালের ৩ অগাস্ট আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেয়। এরপরই কাহহার আকন্দ মামলাটির অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পান।