৭৩ এর আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে

সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধের তদন্ত প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন,"৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট অনুযায়ী এক বা একাধিক ট্রাইবুনাল গঠন করে এ বিচার কাজ শেষ করা হবে।" বিস্তারিত জানাচ্ছেন প্রদীপ চৌধুরী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2009, 04:06 AM
Updated : 25 March 2009, 04:06 AM
ঢাকা, মার্চ ২৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইন ১৯৭৩ অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধের তদন্ত প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন,"৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট অনুযায়ী এক বা একাধিক ট্রাইবুনাল গঠন করে এ বিচার কাজ শেষ করা হবে।" বিস্তারিত জানাচ্ছেন প্রদীপ চৌধুরী।
একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তিন বা চার সদস্য নিয়ে এ ট্রাইবুনাল গঠন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, "চেয়ারম্যানের যোগ্যতা হবে হাইকোর্টের বিচারপতি অথবা কোর্ট মার্শাল জেনারেলের যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি।"
আইনমন্ত্রী বলেন, "রাজনৈতিক অথবা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যদি কেউ হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদির মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করে তবে তাকে এ আইনে বিচার করা হবে। অপরাধী ব্যক্তি হিসেবে অথবা সহযোগী বাহিনীর সদস্য হিসেবেও বিচারের মুখোমুখি হতে পারে।
কবে বিচার কার্যক্রম শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "অতি দ্রুতই বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। প্রসিকিউটর নিয়োগ করা হবে। তদন্তকারী সংস্থাও নিয়োগ দেওয়া হবে।
"অভিযুক্তরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সব ধরনের সুযোগ পাবেন। আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। পাশাপাশি আপিল বিভাগে যাওয়ারও সুযোগ থাকবে এই ট্রাইব্যুনালে।"
ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, "প্রত্যেক ব্যক্তিরই অধিকার রয়েছে বিচার চাওয়ার। তবে অপরাধ প্রমাণ করতে না পারলে যুদ্ধাপরাধীরা খালাস পেয়ে যাবে। একই অপরাধের অভিযোগ দ্বিতীয়বার কারো বিচার করা যায়না।"
সরকারি দলের কোন মন্ত্রী বা এমপি অথবা অন্য কেউ যদি যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে সেক্ষেত্রে কি হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে শফিক আহমেদ বলেন, "অপরাধী যেই হোক, যে দলেরই হোক না কেন তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে।"
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুল ইসলামকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি। এমন আরো অনেককেই বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "কাউকে বিদেশ যেতে না দেওয়ার বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ের নয়। আমাদের কাছে কোন তালিকাও নেই। সরকারই এ বিষয়ে বলতে পারবে।"
এর আগে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, "১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এ সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি।"
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কমিটির প্রথম বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ সরকার জাতির কাছে প্রতিশ্র"তিবদ্ধ যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে। তারই প্রেক্ষাপটে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অতি দ্রুত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।"
তানজিম আহমেদ বলেন, "১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা যায় কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কমিটি। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ট্রাইবুনাল গঠন, তদন্ত প্রক্রিয়া, প্রসিকিউশন সহ অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে বৈঠকে।"
তিনি বলেন, "নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিলেন। তারই ভিত্তিতে এ কমিটি কাজ করছে।"
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাহারা খাতুন, আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/পিসি/এফএফ/জিএনএ/১৬২৪ ঘ.