সহযোগী সংগঠন রাখবে না আ. লীগ

নতুন নির্বাচনী আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আওয়ামী লীগ কোনও সহযোগী সংগঠন রাখবে না। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোর কোনও অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন থাকতে পারবে না। বিদেশে শাখা রাখাও যাবে না। (বিস্তারিত)

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2008, 03:13 AM
Updated : 7 Oct 2008, 03:13 AM
ঢাকা, অক্টোবর ০৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- নতুন নির্বাচনী আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আওয়ামী লীগ কোনও সহযোগী সংগঠন রাখবে না।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোর কোনও অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন থাকতে পারবে না। বিদেশে শাখা রাখাও যাবে না।
মঙ্গলবার দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আওয়ামী লীগের কোনও সহযোগী সংগঠন থাকবে না।"
আগামী শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে তিনি জানান।
তবে বিদেশি শাখা সম্পর্কে কিছু জানাননি তিনি।
দলটির নয়টি সহযোগী সংগঠন রয়েছে। এগুলো হলো- মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, তাঁতি লীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ।
এ সংগঠনগুলোর কী অবস্থা হবে- জানতে চাওয়া হলে সৈয়দ আশরাফ বলেন, "তারা স্বাধীন হয়ে যাবে।"
বিএনপিসহ চারদলীয় জোট এর বিরোধিতা করলেও আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, তারা আইন মেনে নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত।
দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিল্লুর রহমানের গুলশানের বাসায় সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সৈয়দ আশরাফ সাংবাদিকদের জানান, শেখ হাসিনার বিশেষ নিরাপত্তার জন্য আবেদন করবেন তারা।
নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য বুধবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে আলোচনা করবে আওয়ামী লীগ। ওই দিনই নিবন্ধনের ফরম আনা হবে বলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জানান।
নির্বাচনে দেশি পর্যবেক্ষক না রাখার পক্ষে আওয়ামী লীগ। দলের নির্বাচনী ইশতেহারের খসড়া তৈরি হয়েছে জানিয়ে আশরাফ বলেন, মহাজোটের বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই আওয়ামী লীগ মনোনয়নে মনোনিবেশ করবে।
শেখ হাসিনার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, "আমরা তার (শেখ হাসিনা) নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। সরকারের সঙ্গে আমাদের এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এ জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। উনি দেশে ফেরার আগেই আমরা আবেদন করব।"
কী ধরনের নিরাপত্তা চান- সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "সরকার প্রধানকে যে রকম নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে; আওয়ামী লীগ চাচ্ছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও সে রকম নিরাপত্তা দেওয়া হোক।"
কারাবন্দি শেখ হাসিনা সরকারের আদেশে সাময়িক মুক্তি নিয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন।
তিনি কবে দেশে ফিরবেন- জানতে চাইলে আশরাফ বলেন, "তিনি (হাসিনা) আগামী ২৬ অক্টোবর দেশে ফিরতে পারেন।"
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জানান, আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার ইসিতে যাবে।
তিনি বলেন, "মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরও নির্বাচন কমিশন যে কোনও ব্যক্তির প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে বলে নির্বাচনী আচরণবিধিতে বলা হয়েছে। এ ধরনের আইনে আমরা খুবই আশ্চর্য হয়েছি। এটা আমরা আলোচনায় তুলব।"
আগামী শনিবার কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক থেকে নিবন্ধনের জন্য আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করা হবে। এরপর নিবন্ধনের আবেদন করা হবে।
নির্বাচন দেশি পর্যবেক্ষকের বিরোধিতা করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, "দেশের কোনও সংগঠনকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসাবে রাখা যাবে না। আমি আমার এলাকায় দেখেছি, ছাত্রদল ও বিএনপির নেতারা পর্যবেক্ষকের ব্যাজ লাগিয়ে ঘুরছে। এশিয়া ফাউন্ডেশনসহ আমেরিকা, সুইডেন, ডেনমার্ক থেকে যারা বাংলাদেশের পর্যবেক্ষকদের ফান্ড দেয়, আমরা তাদেরকে চিঠি দেব দেশি পর্যবেক্ষকদের আর যেন তহবিল দেওয়া না হয়।"
আশরাফ জরুরি আইন তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, "আইন দিয়েই নিশ্চিত করতে হবে- নির্বাচন যেন পেশীশক্তি ও কালো টাকা মুক্ত হয়। জরুরি আইনের কিছু বিধান এক্ষেত্রে সাধারণ আইনের বিধান হিসাবে সরকার চালাতে পারে। কিন্তু, এ জন্য জরুরি অবস্থা বহাল রাখার কোনও দরকার নেই।"
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেন, "খসড়া ইশতেহার হয়ে গেছে। কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে কিছু সংযোজন ও বিয়োজনের পরই তা চূড়ান্ত করা হবে। আর মহাজোটের বিষয়টি চূড়ান্ত হলেই আওয়ামী লীগ মনোনয়নে মনোনিবেশ করবে।"
জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর মঙ্গলবারের বৈঠকে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমদ, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ছাড়াও দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক নূহ-উল আলম লেনিন উপস্থিত ছিলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসইউএম/এমআই/জিএনএ/১৭০০ ঘ.