নির্বাচনকালীন সরকারের বার্তা সরকারকে ‘পৌঁছে দেবেন’ সিইসি

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদের মধ্যে যেসব কথা সংলাপে এসেছে, তা সরকারকে পৌঁছে দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2022, 05:44 PM
Updated : 21 July 2022, 05:44 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের পঞ্চম দিনে গণপ্রন্টের সঙ্গে বৈঠকে সমাপনী বক্তব্যে একথা জানান তিনি।

সিইসি বলেন, “নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে এখন বড় বিতর্ক মাঠে চলছে, নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার-বিভিন্ন কথা।

“আপনারাও (গণফ্রন্ট) বলেছেন, নির্বাচনকালীন রাজনৈতিক সরকার অবশ্যই গঠন করতে হবে। এ বিষয়টা অনেকে বলেছেন, এ সরকারই করতে পারবে। সংবিধানে আমাদের যে কেবিনেট ফরমেশনটা রয়েছে। আমরা কিন্তু আপনাদের মেসেজগুলো সরকারের কাছে পৌঁছে দেব।”

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে তা রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় বিতর্ক হয়ে থাকছে। বিএনপিসহ তাদের মিত্র দলগুলো নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হলে আগামী সংসদ নির্বাচন বর্জনের হুমকি দিয়ে রেখেছে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের প্রস্তাব সরকারকে দেওয়ার পরামর্শও দেন সিইসি।

“আপনারা নিজেদের মধ্যে আলোচনার দরকার আছে। যথাসময়ে সরকার সমীপেও সে প্রস্তাব দেবেন। আমি বিশ্বাস করি যে কোনো উপযুক্ত প্রস্তাব গ্রহণ করার মানসিকতা অবশ্যই যে কোনো দায়িত্বশীল সরকারের থাকবে নির্বাচনের স্বার্থে।”

আগামী নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব নিয়ে আসা বর্তমান ইসির প্রধান হাবিবুল আউয়াল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নির্বাচকালে সরকারের সার্বিক সহায়তা প্রত্যাশা করছেন।

নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকার বিষয়ে তিনি বলেন, “(নির্বাচনকালীন) সরকার, কোনো না কোনো সরকার তো থাকবেন। সেই সরকারকে নিরপেক্ষ থেকে কমিশনকে সহায়তা করতে হবে। সেটা সরকারের সাংবিধানিক সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব হবে।

“কমিশন তার ক্ষমতা সংবিধান, আইন ও বিধি বিধানের আলোকে প্রয়োগ করবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনে নির্বাহী সকল কর্তৃপক্ষকে নির্বাচন কমিশনের আদেশ ও নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।”

সিইসির ভাষ্য, জনপ্রশাসনকে ‘বিরাজনীতিকরণ’ করতে হবে অন্তত নির্বাচনকালীন সময়ে। তারা যেন নিরপেক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কর্মচারী হিসেবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করেন।

“বারবার নির্বাচন বিফল হয়, বিতর্ক হলে আমাদের স্বাধীনতা-গণতন্ত্রের জন্য এটা অশনি সঙ্কেত বয়ে আনবে- একথা যে বলেছেন, এটা যেন সকালে উপলব্ধি করেন, এটা প্রত্যাশা করি। আসন্ন নির্বাচন যদি অসফল ও ব্যাপকভাবে বিতর্কিত হয়, জনপ্রত্যাশাকে ভূলুণ্ঠিত করে, তাহলে কার কী দায় হবে, কেবল গন্তব্যই তা বলতে পারে।”

তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিজেদের সদিচ্ছা প্রকাশ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “কোনো অপশক্তির চাপে মাথা নত না করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। সকলের আন্তরিক ও সমন্বিত প্রয়াস থাকলে এমন কঠিন কর্মযজ্ঞ সাধন অসাধ্য নয়।”

সহিংসতা রোধে এক পোস্টার-এক মঞ্চ

নির্বাচনী প্রচার একই নির্বাচনী এলাকায় এক পোস্টারে ও এক মঞ্চে আয়োজনের ব্যবস্থা হলে সহিংসতা বন্ধ হবে বলে মনে করেন সিইসি।

গণফ্রন্টের এমন দাবির প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “নির্বাচনে আমাদের প্রচুর সহিংসতা হচ্ছে। অকারণে প্রচারণা, গাড়ি-ঘোড়া, ঢাক-ঢোল নিয়ে, তার চেয়ে যদি প্রজেকশন মিটিংয়ের মতো যদি করা যায়, পৃথিবীর অনেক দেশেই আছে, আমাদের এখানেও যদি করা যায়।

“আমি আশা করি, আমার সহকর্মী মাননীয় নির্বাচন কমিশনাররা বিবেচনা করে দেখবেন, এটা কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।”