পুলিশের সমালোচনা সংসদে

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির সংসদ সদস্যরা।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2022, 06:38 PM
Updated : 30 June 2022, 06:38 PM

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় বিরোধী দলের সদস্যরা এ সমালোচনা করেন।

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, “পুলিশ এখন জনকল্যাণে নয়, আওয়ামী লীগের নিরাপত্তা কল্যাণে নিয়োজিত। দেশে একটি আতঙ্কজনক পরিবেশ বিরাজ করছে। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়নি। এক্ষেত্রে পুলিশ এগিয়ে, তারপর র‌্যাব।”

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “কিছু কিছু পুলিশ কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। অনেক কর্মকর্তা গুলশান-বনানীতে বিলাসী জীবন-যাপন করেন। এদের কারণে সরকারের বদনাম হয়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সরকারের জন্য ভালো।”

সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “পুলিশ যারা দুষ্কর্ম করে তাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। একজন ডিআইজি থেকে শুরু করে অনেক সদস্য এখন জেলে।”

বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, “সরকার আগামী নির্বাচন নিয়েও নীল নকশা করছে। তার একটি আলামত হল বেসরকারি সংস্থা অধিকারের নিবন্ধন সরকার নবায়ন করেনি।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “অধিকার হেফাজতের আন্দোলনের সময় বলেছিল, হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। একটি আজব তথ্য প্রকাশ করেছিল। তাদের চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। তারা একটি নামও দিতে পারেনি।

“অধিকার নিবন্ধনের সময় শেষ হয়ে গেছে। নবায়নের আবেদন এনজিও ব্যুরো পায়, সেখান থেকে জননিরাপত্তা বিভাগে আসে। এখানে সেটি আসেনি।”

স্বাস্থ্যখাতের সমালোচনা

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মঞ্জুরি দাবির আালোচনায় হারুন অভিযোগ করেন, হাসপাতালে নিয়োগ ও ভর্তিতে, কেনাকাটায় ‘ব্যাপক’ দুর্নীতি হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনা দুর্নীতি অনেক বছর ধরেই চলে আসছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর মানুষের ভরসা নেই। সবাই বিদেশে যাচ্ছে।”

রুমিন ফারহানা বলেন, “চিকিৎসার জন্য বিপুল সংখ্যক মানুষ বিদেশ যাচ্ছে। কারণ দেশে স্বাস্থ্য সেবার ওপর মানুষের অনাস্থা। এই খাত সরকারের চরম অমনোযোগ ও অব্যবস্থাপনার শিকার। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় থাকা উচিত। এগুলো বেসরকারি খাতে গেলে ব্যবসাই হয়ে যায় মূল।” 

জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, “ব্যাঙের ছাতার মতো ক্লিনিক-হাসপাতাল গড়ে ওঠেছে। এগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেই, মান নেই। এতে জনগণ হয়রানির শিকার হচ্ছে। সংসদ ভবনের যে ক্লিনিক আছে সেখানেও চিকিৎসার কিছুই নেই।”

বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “১৭ কোটি মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা দেশেই করা হয়েছে। কোভিডকালে সেটা দেখা গেছে, সবাই দেশেই চিকিৎসা নিয়েছেন, কাউকে বাইরে যেতে হয়নি।”

কিছুক্ষেত্রে অনেকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আসে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালগুলোর জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী যন্ত্রপাতি কেনাকাটা হয়।