ঢাবিতে বিরোধীদলের নেতারা কেন যেতে পারবে না, প্রশ্ন রিজভীর
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 22 Jun 2022 04:57 PM BdST Updated: 22 Jun 2022 04:57 PM BdST
বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে সমস্যা কোথায়, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে তো শিক্ষকরা থাকেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা থাকেন। এদের মধ্যে কেউ আমাদের আত্মীয়-স্বজন থাকতে পারে, বন্ধু-বান্ধব থাকতে পারে এবং আমাদের দলের সমমনা ব্যক্তি থাকতে পারে।
“তারা যদি আমাদেরকে দাওয়াত দেয়, সেখানে যদি আমরা যাই, এখানে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব কী করে দাঁড় করায় আওয়ামী লীগ?”
শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে গিয়ে সেখানে মধ্যরাত পর্যন্ত ছিলেন বিএনপি নেতা রিজভী, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্লাবের সভাপতি বিএনপি সমর্থিত সাদা দলের শিক্ষক এবিএম ওবায়দুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
সেই প্রসঙ্গ ধরে বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, গত ১৮ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে জাতীয়তাবাদী দল সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন ইউনির্ভাসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউটাব) একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে তিনি যান।
“ইউটাবের একটি ঘরোয়া দাওয়াতে আমি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকসহ সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ জন উপস্থিত ছিলাম। সেখানে অনেকেই সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন। আমার মিসেসও সেখানে ছিলেন।
“এটাকে এখন ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং তাদের দলদাস কিছু শিক্ষক। বিভিন্ন সংগঠনের নামে এখন তারা ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করে আমাদের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি দিয়ে আমিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছে। খুব ভালো কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দলবাজ প্রশাসন অধ্যাপক ওবায়েদকে নানাভাবে হয়রানি করছে।”
রিজভীর প্রশ্ন, “এটা কি সেনা নিবাস? তা তো নয়। সেখানে বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা যেতে পারবে না কেন?
“এটা আমার মনে হয়েছে যে, পদ্মাসেতু নিয়ে এবং বন্যা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদল বা আমরা যেভাবে সোচ্চার, এটাকে ডাইভার্ট করার জন্য এই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দাঁড় করানো হয়েছে।”
রিজভীর অভিযোগ, “আসলে এক দেশে দুই আইন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবসহ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের অভয়ারণ্য। অনেক রাত পর্যন্ত তারা ক্লাবে আড্ডা দেয় এবং লন টেনিস খেলাসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড চালায়।
“তাদের জন্য সাত খুন মাফ। অথচ কোনো শিক্ষকের আমন্ত্রণে বিরোধী দলের নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সময়ের জন্য সেখানে অবস্থান করলেই তারা সেখানে নাশকতার গন্ধ পায়।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘আওয়ামী-ছাত্রলীগের প্রমোশন জোনে’ পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কারণ ওরা ছাড়া আর কেউ যেতে পারবে না, কারও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকার নেই। সুতরাং এখন আমরা আওয়ামী প্রমোশন জোনই বলব আমরা, তেমনি ছাত্রলীগ প্রমোশন জোন বলব।
“আর এদেরকে ছত্রছায়া দিচ্ছে দলদাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে যাওয়াকে কেন্দ্র করে যে নাটক করা হচ্ছে, আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
এক সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ-রাকসুর ভিপির দায়িত্ব পালন করে আসা বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-কানুন তো আমি জানি। যে আইনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলে, ঠিক একই আইনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলে।
“তারপরেও সেখানে আমি সিন্ডিকেট মেম্বার হিসেবে সাড়ে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-কানুন সম্পর্কে অনেক কিছু জানি। কখনও শুনেনি যে বিরোধী দলের নেতারা রাত্রে অথবা দিনে গেলে পরে নাশকতার বিষয় হবে। এই কথা আমরা কোনো দিন শুনেনি।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ডা. জাহিদুল কবির সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সর্বাধিক পঠিত
- শিক্ষককে পিটিয়ে খুন: মামলায় জিতুর বয়স ১৬, র্যাব বলছে ১৯
- সিরাজগঞ্জে অস্ত্র হাতে ‘ভাইরাল’ সেই বায়েজিদ পিস্তলসহ গ্রেপ্তার
- পদ্মা সেতু: যশোর তাকিয়ে কালনা সেতুর দিকে
- বাঘাইড় বিক্রি করায় সুপার শপকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
- ‘ইউভেন্তুসে বেনজেমা-মদ্রিচের মতোই খেলবে দি মারিয়া’
- বান্ধবীর সামনে ‘হিরো হতে’ শিক্ষককে পেটান জিতু
- জর্দার পোটলা নিয়ে হজে, ভোগালেন সহযাত্রীদেরও
- মুমিনুলকে আবার উইন্ডিজে দেখতে চান বিসিবি প্রধান
- গ্রামীণফোনের নতুন সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা
- পাহাড়ে সশস্ত্র দল; এই ‘বম পার্টি’ কারা?