এ বিভাগের উপ সচিব দুলাল চন্দ্র সূত্রধর বুধবার বেলা ১১টায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর হাতে দাওয়াত কার্ড তুলে দেন।
বিএনপির সাত নেতা- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নামে ওই দাওয়াতপত্র দিয়েছে সেতু বিভাগ।
উপসচিব দুলাল বলেন, “আমি সেতু বিভাগের পক্ষ থেকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্ড দিতে এসেছি।”
কার্ড হাতে নেওয়ার সময় রিজভীর মুখ ছিল ম্লান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এই কার্ড রিসিভ করিনি, কিছু না। আমি অফিসে বসে ছিলাম, জাস্ট তারা দিয়ে গেছেন। ব্যাস।”
তিনি বলেন, “সেতু বিভাগের কর্মকর্তা দিয়ে গেছেন। এটা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এর সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই।”
নয়া পল্টনে কার্ড দেওয়ার সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল খায়ের ভুঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারিসহ অনেকে সেখানে ছিলেন।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পদ্মা সেতু আগামী শনিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে বুধবার সকালে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পদ্মার স্বপ্ন পূরণ নিয়ে তিনি কথা বলেন।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বিএনপি যে সব সময়ই সংশয়ী ছিল, সে কথা তাদের নেতাদের বক্তব্য থেকে উদ্ধৃত করেই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার পর প্রাথমিক সমীক্ষা হলেও বিএনপি যে পরে অন্য জায়গায় সেতু করার কথা বলে প্রকল্প আটকে দিয়েছিল, সে কথাও তিনি বলেন।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের শুরু থেকেই নানা ‘দুর্নীতি ও লুটপাটের’ অভিযোগ করে আসছেন বিএনপি নেতারা। ২০১৩ সালের জুনে প্রকল্পের শুরুর দিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, “বিশ্ব ব্যাংকের সম্পৃক্ততা ছাড়া পদ্মা সেতু নির্মাণ অসম্ভব। সরকারের একগুয়েমি ও দাম্ভিকতার কারণে বিশ্ব ব্যাংক এই সেতু প্রকল্প থেকে অর্থায়ন তুলে নিয়ে গেছে।
“এখন পদ্মাসেতুর টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। এটি পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছুই নয়। বিশ্ব ব্যাংক ছাড়া এই সেতু নির্মাণ ইমপসিবল।”
শুরুতে এই প্রকল্পে অর্থায়নের চুক্তি করে বিশ্ব ব্যাংক। পরে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে, যা নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন চলে। কিন্তু সেই অভিযোগ তারা প্রমাণ করতে পারেনি।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে নিজস্ব অর্থায়নে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকায় নির্মিত এ সেতুতে এখন যান চলাচাল শুরুর অপেক্ষায় পুরো দেশ।