প্রথম শর্ত সরকারের পদত্যাগ: ফখরুল

সরকারের পদত্যাগ ছাড়া নির্বাচনের যাওয়ার ‘প্রশ্নই ওঠে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2022, 11:03 AM
Updated : 8 May 2022, 01:51 PM

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের সরকার পদত্যাগ না করলে এবং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে নির্বাচনের কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না।

“প্রথম শর্ত হচ্ছে...তাদেরকে রিজাইন করতে হবে এবং একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তারা নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এবং সেই নির্বাচন কমিশন যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে, সেখানে দিয়ে একটা জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার ও পার্লামেন্ট গঠিত হবে।”

শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে রোববার গুলশান কার্যলায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন মির্জা ফখরুল।

আগামী নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি মনে করি, কোনো কথাই হবে না যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করে; এ ছাড়া কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

“এ নিয়ে আমরা কোনো কথাই বলতে চাই না। নির্বাচনে তো আমরা যাবই না, যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকে।”

বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করার সুযোগ দেওয়া বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফখরুল বলেন, “তারা একটা মুনাফেক দল এবং তারা এই কথাটা বলতেই থাকে। তারা সুন্দর সুন্দর কথা বলে, দেখলে মনে হয় এদের মত ভালো মানুষ আর নাই। আর ভেতরে ভেতরে যা করার তা করে যাবে।

‘‘এই ঘটনাগুলো তারা করছে তারা ভদ্রলোকের মতো কথা বলে, গণতন্ত্রের মতো কথা বলে। সভা-সমাবেশ তো দূরের কথা, একটা মিলাদ করতে...ঈদ পুনর্মিলনীতে আক্রমণ করে, দোয়া মাহফিলের মধ্যে আক্রমণ করে এদের কাছ থেকে কী আশা করতে পারেন। সব তো মুনাফেকি।”

ভোজ্য তেলের বাজারে অস্থিরতার প্রসঙ্গ ধরে ফখরুল বলেন, “সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির মূল কারণটি হচ্ছে, এই সরকার দুর্নীতিবাজ। তারা সিন্ডিকেট নিয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে আছে তাদের সমস্ত ব্যক্তিরা। এই কারণে এভাবে জনগণের ওপর ভয়াবহ একটা অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেছে।

“এক লাফে যদি সরকারিভাবে ৩৮ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়...। বাজারে তো আপনি ২২০ টাকায় তেল পাচ্ছেন না। তেল নাই, উধাও হয়ে গেছে। এটাই হচ্ছে চোরাকারবারি, চোরাচালানের মূল বিষয়টা। সরকার তো এখন চোরাকারবারি হয়ে গেছে।

শনিবার কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসায় ‘হামলার’ অভিযোগ করে নিন্দা জানান মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, “এই অনির্বাচিত সরকার তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করবার জন্যে আবার এখন থেকেই সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। গতকাল (শনিবার) আমাদের স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করতে তার বাড়ি দাউকান্দিতে তার বাসভবনে গিয়েছিলেন এবং সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।

“ওইখানে তিনি বের হয়ে তিতাসে তার একটি নিমন্ত্রণ ছিল, সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করার জন্য যখন তিনি বের হয়েছিলেন তখন অতর্কিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাঠি-সোঁঠা, ইট-পাটকেল ছুড়ে তার ওপরে এবং যারা তার সঙ্গে ছিলেন তাদের ওপর আক্রমণ করে।”

বিএনপি মহাসচিব নেতা বলেন, “যেহেতু তিনি আমাদের স্থায়ী কমিটির সিনিয়র লিডার, তার ওপরে হামলাকে আমরা মনে করি স্থায়ী কমিটির ওপর হামলা, আমাদের দলের ওপর হামলা। আমরা এটাকে ছোট করে দেখতে পারি না। আওয়ামী লীগের এই হামলায় প্রমাণ হয়েছে যে, তাদের চরিত্রের এতটুকু পরিবর্তন হয়নি।”