খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও বাড়াতে আবেদন

দুর্নীতিতে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও বাড়ানোর আবেদন করেছে তার পরিবার; সেই আবেদন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2022, 08:23 AM
Updated : 16 March 2022, 08:53 AM

বুধবার  মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা সভা শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "খালেদা জিয়ার পক্ষে আবেদন পেয়েছি, তার পরিবার আবেদন করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।"

এ নিয়ে পঞ্চমবারের মত খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করা হল। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে তার দণ্ডের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার। সেই মেয়াদ ২৪ মার্চ শেষ হবে।

প্রতিবার একই শর্তে তাকে কারাগারের বাইরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গতবছর ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। দণ্ডের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলে তিনি কারামুক্ত হন। এরপর চার দফায় দুই বছর তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। গতবছর করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাও নিয়েছেন।

সর্বশেষ গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা। দীর্ঘ ৮১ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত ১ ফেব্রুয়ারি তিনি গুলশানের বাসায় ফেরেন।

সে সময় তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল পরিবারের পক্ষ থেকে। তবে দণ্ড স্থগিতের শর্তের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সরকার তা নাকচ করে দেয়।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সে সময় বলেছিলেন, শর্তসাপেক্ষে মুক্ত থাকা অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার আবেদন বিবেচনার সুযোগ নেই। তাকে কারাগারে ফিরে তবেই আবেদন করতে হবে।

সিআরপিসির ৪০১(১) ধারায় বলা আছে, যখন কোনো ব্যক্তিকে অপরাধের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়, তখন সরকার যে কোনো সময় শর্ত ছাড়াই অথবা শর্তসাপেক্ষে শাস্তি স্থগিত করতে পারে অথবা তাকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তার পুরো বা যে কোনো অংশ স্থগিত করতে পারে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজায় কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়। তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে।

পুরনো খবর