দলগুলোর কাছে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটি, সময় ৪ দিন

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী চার দিনের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে নাম প্রস্তাব করতে বলেছে সার্চ কমিটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2022, 04:56 PM
Updated : 11 Feb 2022, 03:07 PM

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব শফিউল আজিমের স্বাক্ষরে এ বিষয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে রোববার রাতে। সেখানে বলা হয়েছে, আইনে বর্ণিত যোগ্যতা অনুযায়ী যোগ্য দশজন ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করতে পারবে প্রত্যেক দল।

১১ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টার মধ্যে সেই তালিকা সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেওয়া বা ইমেইলে (gfp_sec@cabinet.gov.bd) করা যাবে। 

ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ আগ্রহী হলে তিনিও নিজের নাম প্রস্তাব করতে পারবেন। তাদেরও পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে হবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে।

রোববার বিকালে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন সার্চ কমিটির প্রথম সভায় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চাওয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে রাতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। 

সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে প্রায় তিন ঘণ্টার ওই বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে।

নতুন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার খুঁজতে সার্চ কমিটি রোববার প্রথম বৈঠক করে। সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসেন কমিটির সভাপতি আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ সদস্যরা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

সভায় তিনটি সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম পরে সাংবদিকদের বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চাইবে কমিটি, ব্যক্তিগতভাবেও যে কেউ জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে পারবে। মঙ্গলবার সার্চ কমিটি নিজেরা বৈঠক করবে; শনিবার ও রোববার সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতামত নেবে।”

সবার সঙ্গে আলোচনা শেষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আইন অনুযায়ী যোগ্য বিবেচিতদের মধ্যে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করা হবে রাষ্ট্রপতির কাছে। তাদের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে বেছে নিয়ে রাষ্ট্রপতি গঠন করবেন ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন। সেই ইসির ওপরই থাকবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার।

নতুন ইসি গঠনের প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০ ডিসেম্বর থেকে ১৭ জানুয়ারি সংলাপ করেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে।

৩২টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৫টি দল বঙ্গভবনে আলোচনায় যোগ দেয়। বিএনপিসহ সাতটি দল সংলাপের আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি।

সংলাপে অধিকাংশ দলের দাবির মধ্যে সরকার নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নে উদ্যোগী হয়। সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন’র ২৭ জানুয়ারি সংসদে পাস হয়। সেই আইনের আলোকে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠিত হয় শনিবার।

আইন অনুযায়ী, ইসি গঠনে নামের সুপারিশ চূড়ান্ত করার জন্য সার্চ কমিটি ১৫ দিন সময় পাবে। অবশ্য তার আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বর্তমান কমিশনের মেয়াদ।

নিবন্ধিত ৩৯ দল

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, জাতীয় পার্টি- জেপি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বি.এন.পি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, ,বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ,বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস্‌ পার্টি (এনপিপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ কংগ্রেস।