ইসি গঠন আইন: ফখরুলের প্রতিক্রিয়া ‘প্রত্যাশিতই’ ছিল কাদেরের কাছে

নির্বাচন কমিশন গঠনের যে আইন সংসদে পাস হয়েছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তা প্রত্যাখ্যান করায় ‘অবাক হননি’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2022, 09:04 AM
Updated : 28 Jan 2022, 09:04 AM

তিনি বলেছেন, “যে দল বা ব্যক্তি দেশের জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করে, তাদের কাছ থেকে এই ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যই প্রত্যাশিত ছিল।”

শুক্রবার ঢাকায় নিজের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন ওবায়দুল কাদের। তার বিশ্বাস, বাংলাদেশের ইতিহাসে গণমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন গঠন আইন ‘এক অনন্য মাইল ফলক’ হিসেবে বিবেচিত হবে।

নানা সমালোচনা ও বিতর্কের মধ্যে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল’ পাস। এ আইনের অধীনেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেবেন রাষ্ট্রপতি; নতুন কমিশনের অধীনেই হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

ওই আইন প্রত্যাখান করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার বলেন, “নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এই আইন আমরা মানি না। এটি শুধু আমাদের কাছে নয়, দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, গ্রহণীয় হতে পারে না।

“আর যে আইন মানুষ গ্রহণ করে না- সেটি কোনো আইনই নয়, সেটাকে কেউ মানবে না, এটাকে কেউ মানবেই না।”

ওবায়দুল কাদেরের ভাষায়, মির্জা ফখরুলের ওই বক্তব্য ‘দুরভীসন্ধিমূলক’।

“বিএনপি মহাসচিব দেশবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থি গণধিকৃত গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন কমিশন গঠনের আইনের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, জাতীয় সংসদের সকল সদস্য ও দেশের সংবিধান এবং আইনের শাসনের প্রতি নির্মম উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আইনকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে মিথ্যা বিভ্রান্তিমূলক মনগড়া বক্তব্য দিচ্ছে। দেশের আইন ও সংবিধানের প্রতি বিএনপির কোনো বিশ্বাস নেই। বিএনপি জনগণের ভোট নয়, বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করেই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চায়।”

বিএনপি এখন নির্বাচন ছাড়া ‘ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে’ ক্ষমতা দখল করতে ‘উন্মত্ত’ হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, “বিএনপি এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জাতির কাছে স্পষ্ট করতে হবে, তারা কাদের দেওয়া টাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন? বাংলাদেশ থেকে এই অর্থ কোন চ্যানেলে বিদেশে পাচার করা হয়েছে? তার হিসাব কি বিএনপি নির্বাচন কমিশনের কাছে দিয়েছে?”

এসব প্রশ্নের জবাব দিতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো নৈতিক ও আইনগত অধিকার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘থাকবে না’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া সংবিধানের অভিপ্রায় অনুযায়ী পঞ্চাশ বছর পর ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল’ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ায় সংসদ নেতা শেখ হাসিনাসহ জাতীয় সংসদের সকল সদস্যদের প্রতি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান ওবায়দুল কাদের।

নির্বাচন কমিশন গঠন আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলাদেশে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে যা কিছু হয়েছে, তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মতো নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধানের আলোকে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে এই আইন ‘অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে’ বলে তার বিশ্বাস।