জন্মদিনে প্রিয়জনের শুভেচ্ছায় সিক্ত মির্জা ফখরুল

জন্মদিনের ভোরে অস্ট্রেলিয়া থেকে বড় মেয়ে মির্জা সামারুহ আর ঢাকা থেকে বড় বোন আনারকলি ফরহাদ বানু নাগিনা আমিনের টেলিফোনে ঘুম ভেঙেছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2022, 06:44 AM
Updated : 26 Jan 2022, 06:53 AM

মঙ্গলবার ২৬ জানুয়ারি ৭৪ বছর পূর্ণ করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। ১৯৪৮ সালের এই দিনে ঠাকুরগাঁওয়ে তার জন্ম।

সকালে টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বলতে পারেন একটা লং জার্নি। এই ৭৪ বছরে বহু পরিবর্তন দেখেছি, দেশের পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। বহু জীবন দেখেছি। অনুপ্রাণিত হয়েছি। বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে পেয়েছি। জীবনকে সুন্দর মনে হয়েছে।

“যদিও বাংলাদেশের মানুষের এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। তবুও মনে হয়েছে, এই ৭৪ বছরে জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এই সংগ্রামী মানুষ কখনো পরাজিত হয় নাই। আশার আলো দেখি। বিশ্বাস করি, পরিবর্তন আসবেই। মানুষ ভালো থাকবে।”

মাত্র কয়েক দিন হল করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছেন বিএনপি মহাসচিব। সকাল থেকেই বন্ধু, স্বজন, নেতাদের অনেকে টেলিফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

“সকাল বেলা স্ত্রীও জন্মদিনের উইশ করেছে। লন্ডন থেকে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সিনিয়র নেতারাও টেলিফোন করেছেন। জন্মদিনটা তো এভাবেই যাচ্ছে,” বললেন ফখরুল।  

তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগমও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। উত্তরার বাসাতেই আইসোলেশনে ছিলেন তারা। ভাইরাস থেকে সেরে উঠলেও এখনো দুবর্লতা কাটেনি বলে জানালেন মির্জা ফখরুল।

ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে আসা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন শাখার সভাপতি এবং এসএম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন ফখরুল। ঢাকা কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন তিনি।

১৯৮৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি পুরোপুরি রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে জিতে হন চেয়ারম্যান।

ছাত্রজীবনের বাম রাজনীতি থেকে মির্জা ফখরুলের জাতীয় রাজনীতিতে হাতেখড়ি আবদুল হামিদ খান ভাসানীর দল ন্যাপে। সেখান থেকেই তার বিএনপিতে যোগদান।

১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী এস এ বারীর একান্ত সচিব ছিলেন ফখরুল।

১৯৯২ সালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি, পরে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব পদে উঠে আসেন তিনি। ২০১১ সাল থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে মহাসচিব নির্বাচিত হন।

বিএনপির শীর্ষ পর্য়ায়ের নেতৃত্বে আসার আগে তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রথম সহসভাপতি এবং পরে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন দীর্ঘদিন।

ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ফখরুল। ২০০১-২০০৬ মেয়াদের বিএনপি সরকারে তাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া।

২০১৮ সালে একাদশ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে তিনি শপথ না নেওয়ায় ওই আসনে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপির জিএম সিরাজ সংসদে যান।

মির্জা ফখরুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জন্মদিন মানে আরো একটি বছর চলে গেছে। বড় মেয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে টেলিফোন করেছে, মেয়ে, তার জামাই ‘হ্যাপি বার্থে ডে’ বলল। ছোট মেয়ে ঢাকায় থাকে, সেও উইশ করেছে।”

দুই মেয়ে নিয়েই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রাহাত আরা বেগমের সংসার।

বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ অস্ট্রেলিয়ায় স্বামী-সন্তান নিয়ে আছেন। সিডনির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ নিয়ে এখন ক্যানবেরার ফেডারেল মেডিকেল কাউন্সিলের সিনিয়র সাযেন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।

ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহ ধানমণ্ডির সানি ডেল স্কুলে শিক্ষকতা করেন।