‘ইভিএমের বাক্স’ বঙ্গোপসাগরে ফেলা হবে: গয়েশ্বর

আগামী নির্বাচনের আগেই ‘ইভিএমের বাক্স’ বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2022, 12:30 PM
Updated : 22 Jan 2022, 12:30 PM

শনিবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ হুমকি দেন।

গয়েশ্বর বলেন, “এই সরকার, এই নির্বাচন কমিশনারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়- এ কথা শুনে পশু-পাখি-জানোয়াররাও কিন্তু বিব্রতবোধ করে। আপনারা বিব্রতবোধ করেন না কেন? আপনারা কেন মনে করেন যে, হাসিনার উদাহরণ হিসেবে তার অধীনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, জনগণ বিশ্বাস করেছে? মোটেও না। জনগণ বিশ্বাস করে নাই।

“আর ইভিএম। আগামী নির্বাচনের আগেই এই ইভিএমের বাক্স বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া হবে।”

নির্বাচনী স্বচ্ছতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যার যার ভোট সে সে দেবে, কেন্দ্রে গিয়ে দেবে, দিনের ভোট দিনে করবে। আন্দোলনটা কিন্তু আমাদের এই জায়গায়।

“সেই ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে এ কথা আমরা বলছি না। ভোটে পরাজিত হওয়ার মধ্যে সম্মান আছে, কিন্তু ভোট চুরি করে জয়লাভের মধ্যে সম্মান নাই, চোর বলে আখ্যায়িত হয়। আজকে যারা পার্লামেন্টে আছে প্রকাশ্যেই তো মানুষ বলে যে, ভোট চোর। এর চেয়ে বড় অপমান কী হতে পারে?”

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলে তিনি বলেন, “সরকারের উদ্দেশে একটা কথাই বলব, ভবিষ্যত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্ষমতায় থাকেন বা বিরোধী দলে থাকেন, সকলের মাঝে থাকেন। বেঁচে সুস্থ থাকতে পারেন, সুস্থ থাকতে পারেন, শান্তিতে থাকতেও পারেন। সেই উদ্যোগটা গ্রহণ করেন।

“স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে, সংসদ বাতিল করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যদি নির্বাচনটা দেন। হয়ত মানুষের যে ক্ষোভ আছে এবং মানুষ যতটা আপনাদেরকে ঘৃণা করে সেখান থেকে কিছুটা হলেও সহানুভূতির অংশ আপনাদের ভাগ্যে জুটতে পারে।”

‘জেলখানা আরও বড় করতে হবে’

গয়েশ্বর বলেন, “মৃত্যু যখন আমাদের সকলের অনিবার্য। সেখানে জেলকে ভয় করার কোনো কারণ নাই। গোটা দেশটাই যখন জেলখানা সেখানে এই ছোট্ট একটা কক্ষকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই। হয়ত জেলখানায় যাওয়ার পর্বটা শেষ হলে হয়ত জেলখানাটা খালি থাকবে না। পালাক্রমে কেউ ঢুকবে, কেউ আসবে এবং পরবর্তীতে জেলে যাওয়ার কাজটা তাদের হবে, যারা ক্ষমতায় আছে তাদের হবে।

“জেলখানাগুলো আরও দ্বিগুণ বড় করতে হবে। কারণ এত চুরি, এত বাটপারি, এত খুনি, এত সন্ত্রাসী সরকারের ছত্রছায়ায় আছে, এদের জায়গা এই জেলাখানাগুলোতে হবে না; সেখানে আবার নতুন করে তাঁবু টানাতে হবে। আমাদের এখন জেলে যাওয়ার তাড়া নেই। জেলে যাওয়ার পালা তাদের।”

বিএনপির জনস্রোতে ভয় পেয়ে সরকার কোভিড ‘বিধি-নিষেধ’ জারি করেছে বলে জনগণ বিশ্বাস করে- এমন দাবি করেন গয়েশ্বর।

তিনি বলেন, “করোনাভাইরাস দিয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ করছে, করোনা দিয়ে ‘ঠাণ্ডা’ করছে। অর্থাৎ কেউ কথা বলতে পারবেন না, নড়তে-চড়তে পারবেন না। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায়ও কিন্তু মানুষ মারা যায়। বেশি ঠাণ্ডা রাখতে গিয়ে সরকারেরই পতন হয় কি না সেটাও বিবেচনায় বিষয়।

“সরকারের কৌশলও হতে পারে। মাঠ যদি উত্তপ্ত হয়, সেই উত্তপ্ত অবস্থায় যদি সরকারকে যেতে বাধ্য হতে হয়, তাহলে পরিণতিটা ভয়াবহ হতে পারে তাদের। সরকার এমনও তো কৌশল নিতে পারে- এই ঠান্ডি ঠান্ডি অবস্থায় ঠাণ্ডায় মাথায় চুপ করে কেটে পড়তে পারে। পরিবেশ তো তাই বলছে।”

জিয়া নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে সংগঠনটির ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনাসভা হয়।

জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক ইউনুস মৃধা, ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও‘র রকিবুল ইসলাম রিপন, জিয়া নাগরিক ফোরামের কে এ জামান।