নারায়ণগঞ্জ নির্বাচনে বিতর্ক কম হয়েছে: বিএনপির হারুন

সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক ‘তুলনামূলক কম’ হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ; যার দল এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় প্রার্থীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2022, 12:03 PM
Updated : 17 Jan 2022, 12:26 PM

নিজের নির্বাচনী এলাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ‘স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়নি’ অভিযোগ করে সোমবার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় হারুন বলেন, “গতকালও নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন হয়েছে। তুলনামূলকভাবে এই নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক কম হয়েছে। কিন্তু এখানে মাত্র ৫০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।”

নারায়ণগঞ্জ সিটির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ৬৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকারকে। বিএনপি ভোট বর্জন করায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন, সে কারণে তাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সংসদে হারুন বলেন, “গত ৩০ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর আমাদের ইউপি নির্বাচনগুলো হয়েছে। আমি গত অধিবেশনে আপনার (স্পিকার) মাধ্যমে আবেদন করেছিলাম অন্ততপক্ষে আমার জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে, এটার নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলাম। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছিলাম।

“আমার নির্বাচনী এলাকায় ভোটের দিন ৫০ জন সাংবাদিকের সামনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। সেদিন কোনো নির্বাচন হয়নি। ইভিএমে ভোট হয়েছে। সেখানে ব্যাজ লাগানো, কেউ বলে ইভিএম মনিটর, কেউ টেকনিশিয়ান। আমি তার (সিইসি) সঙ্গে কথা বলেছিলাম, উনিও বলছিলেন, ‘গোপন কক্ষেও লোক!’”

ইসি গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে জনগণের আগ্রহ ও উৎসাহ একেবারেই নাই। প্রধানমন্ত্রী আজ আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন।”

সরকারের তিন বছর পূর্তিতে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণের প্রসঙ্গ ধরে হারুন বলেন, “সেখানে সুস্পষ্ট বলেছিলেন, দুর্নীতিবাজ যে হোক ছাড় দেওয়া হবে না। এটা সুনির্দিষ্টভাবে বলেছিলেন। দুর্নীতির সংজ্ঞা হচ্ছে, অসদুপায় অবলম্বন করা। আপনি অসদুপায় অবলম্বন করে নির্বাচন করেন, নির্বাচিত হোন। অসদুপায় অবলম্বন করে নিয়োগ পান, ভর্তি হোন কিংবা যে কোনো জায়গায় কর্ম বাস্তবায়ন করেন। এটা আমাদের ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”

তার এই বক্তব্যের সময় সংসদে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা হারুনের কথার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

সরকার দলীয় সদস্যদের উদ্দেশে হারুন বলেন, “এত অধৈর্য হয়েন না প্লিজ। এত অধৈর্য হচ্ছেন কেন? যা সত্য, তা বলার সুযোগ স্পিকার আমাকে দিয়েছেন।”

তিনি বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি করব- আমার নির্বাচনী এলাকার যে পৌর নির্বাচন হয়েছে, তার যে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কি না? এটি আমার দাবি। তাহলে কেন আমরা সংসদে থাকব? আমি আপনার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাচ্ছি এই কারণে যে, যারা দায়িত্বে রয়েছেন আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন মন্ত্রী, পুলিশ, নির্বাচন কমিশন কথা দিয়েছিল। তার পরও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।”

এ সময় স্পিকার তার মাইক বন্ধ করে দেন।