তিনি বলেছেন, “বিএনপির সভা-সমাবেশ ঠেকাতেই এই বিধি-নিষেধ কিনা তা নিয়ে জনগণের প্রশ্ন রয়েছে। কারণ সরকারের বিরুদ্ধে মানুষে জেগে উঠেছে, ১৪৪ ধারা ভেঙে সভা-সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেছে। এতেই আতঙ্কিত সরকার।”
মঙ্গলবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন রিজভী।
তিনি বলেন, “যতোই চক্রান্তের জাল ফেলা হোক না কেন, এই সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। মামলা দিয়ে, সাজা দিয়ে কিংবা বিধি-নিষেধ দিয়ে চক্রান্ত করে জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।”
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের দাপটে বিশ্বে নতুন করে বাড়ছে সংক্রমণ। সোমবার দেশে এক দিনে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা এক ধাক্কায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ২২শ ছাড়িয়ে গেছে।
সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে উন্মুক্ত স্থানে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার।
তবে বিধি-নিষেধের মধ্যেও দলের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রিজভী বলেন, “আমাদের যে কর্মসূচি ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে, সেই কর্মসূচি এখনও চলমান। এটি চলমান থাকবে। এখন পর্যন্ত আমার কাছে যে খবর আছে, তাতে আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকার সিদ্ধান্তই রয়েছে।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে দেশের ৪০ জেলায় সমাবেশের কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি। ৮ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
সরকারের ‘ব্যর্থতায়’ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়ছে অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে ৩০ শতাংশ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। শুরুতেই উদ্যোগ নিলে প্রায় শতভাগ করোনা টিকার দেওয়া সম্ভব হতো।
“দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই ৬০ শতাংশের উপরে টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। করোনা মাহমারীর পর থেকে এখন পর্যন্ত টিকা আর করোনা সামগ্রী নিয়ে কেলেঙ্কারি ছাড়া সরকার আর কিছুই উপহার দিতে পারেনি। তারা সঠিক ব্যবস্থা নিলে এবং ৬০-৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার সুযযোগ থাকত না।”
এদিকে আগামী নির্বাচনকে সরকারের নতুন ‘মাস্টার প্ল্যান’ বলে উল্লেখ করেন রিজভী।
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সরকার আরেকটি ‘মাস্টার প্ল্যান’ বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “লাখো নেতাকর্মীর নামে হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা দেওয়া হয়েছিল। সেই মামলাগুলোতে ধারাবাহিক সাজা দেওয়া শুরু করেছে।”
সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে গ্রেপ্তারের ঘটনাকেও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যায়িত করে তার মুক্তির দাবি জানান রিজভী।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা বিলকিস জাহান শিরিন, আবদুস সালাম আজাদ, বেলাল আহমেদ, আকরামুল হাসান, কৃষক দলের ইশতিয়াক আহমেদ নাসির, যুব দলের আবদুল মুনায়েম মুন্না, কামরুজ্জামান দুলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহিদুল কবির সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।