সংলাপ শেষ হচ্ছে ১৭ জানুয়ারি, তারপরই ‘সার্চ কমিটি’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়েই শেষ হবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের এবারের সংলাপ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Jan 2022, 06:07 AM
Updated : 16 Jan 2022, 01:55 PM

আলোচনা শেষ হওয়ার পর গঠন করা হবে ‘সার্চ কমিটি’। এই কমিটি নতুন ইসি গঠনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করবে রাষ্ট্রপতির কাছে।

সেই প্রস্তাব থেকে বেছে নিয়ে পাঁচ বছরের জন্য নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেবেন রাষ্ট্রপতি। সেই কমিশনের অধীনেই ২০২৩ সালের শেষে হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

গত ২০ ডিসেম্বর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে বঙ্গভবনে এবারের সংলাপের খাতা খুলেছিল। আগামী ১৭ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার সূচি রেখেছে বঙ্গভবন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সেদিন বঙ্গভবনে যাবে।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৭ জানুয়ারিই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির আলোচনা শেষ হবে। এরপর সার্চ কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে।”

এবার সার্চ কমিটিতে কারা থাকছেন জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, “রাষ্ট্রপতির সার্চ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে। সেখান থেকেই ঘোষণা দেওয়া হবে।”

বঙ্গভবনের একজন কর্মকর্তা জানান, এবার সার্চ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া গতবারের মতই হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারককে আহ্বায়ক করে এই কমিটিত হাই কোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রধান হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) থাকতে পারেন। এছাড়া দুই জন বিশিষ্ট নাগরিকও থাকবেন এই কমিটিতে, তাদের একজন হবেন নারী।

সংলাপের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আরেক কর্মকর্তা বলেন, “এবার সংলাপ শেষ হওয়ার পরপরই সার্চ কমিটি গঠন করা হতে পারে, কারণ বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কমিশন গঠন করতে হবে। তাছাড়া সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ইসির জন্য নাম চাইতে পারে, তাদের নিজেদেরও বৈঠক করতে হবে।”

সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন হবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে। এ বিষয়ে প্রণীত আইনের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাদের নিয়োগ দেবেন।

স্বাধীনতার পর ৫০ বছরেও কোনো সরকার এ সংক্রান্ত আইন করেনি। ফলে প্রতিবারই ইসি গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে মতভেদ তৈরি হয়।

গত দুই বারের মত এবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠনের উদ্যোগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি সংলাপ শুরু করেছেন।এখন পর্যন্ত ৩২টি দলকে তাতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বঙ্গভবন।

আগের সংলাপগুলোতে অংশ নেওয়া বিএনপি এবার রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে সাড়া দেয়নি। এছাড়া সিপিবি, বাসদ, জেএসডিসহ আরও কয়েকটি দল সংলাপে অংশ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।

সংলাপে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ দলই ইসি গঠনে সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনের কথা বলেছেন। সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রসঙ্গও তুলেছেন কেউ কেউ।

গত দুই কমিশনে পাঁচজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়া এই ব্যক্তিদের সবার ক্ষমতা সমান হলেও সমন্বয়ের জন্য একজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে। তার মধ্যেই রাষ্ট্রপতিকে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে।