খালেদার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত যাচ্ছে স্বরাষ্ট্রে

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালাদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার ভাইয়ের করা আবেদনে মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছে আইনমন্ত্রণালয়।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2021, 09:09 AM
Updated : 27 Dec 2021, 09:24 AM

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সোমবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তবে আইন মন্ত্রণালয় কী মতামত দিয়েছে, সে বিষয়ে বলতে রাজি হননি তিনি।

মন্ত্রী বলেন, “আজ আইনি মতামত দেওয়া হয়েছে।এই আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যাবে। যেহেতু এই আবেদন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যাবে, তাই কী মতামত দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।”

আনিসুল হক স্পষ্ট করে না বললেও এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় যে আগের অবস্থানেই রয়েছে, সেই ইংগিত পাওয়া যায় তার কথায়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “৪০১ ধারায় যে ৬টি উপধারা আছে, সেখানে পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন আবার বিবেচনা করার সুযোগ নাই।"

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা হলে কারাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়।

দেশে করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর খালেদার পরিবারের আবেদনে তাকে গত বছরের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। তবে তাতে শর্ত ছিল, তাকে দেশেই থাকতে হবে।

কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া ওঠেন গুলশানের বাসা ফিরোজায়। এরপর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে এ বছরের মাঝামাঝি তিনি প্রায় দুই মাস হাসাপাতালে থাকেন। এরপর আরও দুই দফা তাকে হাসপাতালে যেতে হয়। 

৭৬ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বুহ বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। সর্বশেষ গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা।

বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার ‘সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেই’ দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই। সাময়িক মুক্তির শর্তের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করা হয়।

এবার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় খালেদাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আবারও সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেন বিএনপিপন্থি ১৫ জন আইনজীবী। আর বিএনপির পক্ষ থেকে অনশন, মানববন্ধন, সমাবেশের মত কর্মসূচি দেওয়া হয়।

সম্প্রতি এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আনিসুল হক বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার বিষয়ে আবেদন বিবেচনা করতে ‘নজির’ খুঁজছেন তিনি। উপমহাদেশে কোনো আদালতে এমন ‘নজির আছে কি না’ তা দেখে ‘কিছুদিনের মধ্যেই’ সিদ্ধান্ত জানাবেন।

তবে তার আগে তিনি বলেছিলেন, দণ্ডিত খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে চাইলে তাকে আবার কারাগারে ফিরে গিয়ে সরকারের কাছে নতুন করে আবেদন করতে হবে।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সোমবার তিনি বলেন, “আমি আইনের যে ব্যাখ্যা দিয়েছি, সেই ব্যাখ্যার কোনো... কোনোখানে দেখি নাই কোনো জাজমেন্টে দেখি নাই এটার সঙ্গে দ্বিমত আছে।আমার ব্যাখ্যাটা সঠিক বলে আমি মনে করি।"