অগোচরে থাকা মুরাদ ‘আল্লাহর ওয়াস্তে’ মাফ চাইছেন

অডিও কেলেঙ্কারির পর প্রতিমন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো মুরাদ হাসান নিজেকে আড়ালে রাখলেও ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2021, 04:21 PM
Updated : 8 Dec 2021, 04:24 PM

বুধবার বিকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পাতায় এক পোস্টে তিনি লিখেছেন,

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পরম শ্রদ্ধেয় মমতাময়ী মা,বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা, আমি যে ভুল করেছি তা আল্লাহর ওয়াস্তে আমাকে মাফ করে দিবেন। আপনি যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা আমি সবসময়ই মাথা পেতে নিবো আমার বাবার মতো।”

গত সোমবার ওবায়দুল কাদের যখন বলেছিলেন যে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তারপর থেকে অগোচরে রয়েছেন তিনি।

তবে মঙ্গলবার তিনি প্রথমে ইমেইলে পদত্যাগপত্র জমা দেন মন্ত্রণালয়ে। পরে পদত্যাগপত্রের হার্ড কপিও পাঠান। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তার বিদায়ের প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এর মধ্যে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগও মুরাদকে জেলা কমিটিতে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়।

এসবের মধ্যে মুরাদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেইসবুক পোস্টে ক্ষমা চেয়ে তিনি লিখেছিলেন, “আমি যদি কোন ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি, তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।”

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে বর্ণ ও নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করে সমালোচনায় পড়েন মুরাদ হাসান।

এরপর চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার অশালীন আচরণের একটি অডিও অডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়ে মুরাদের অশালীন বক্তব্যের অডিওও ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে মুরাদের বিদায় ঘণ্টা বেজে যায়।

বুধবার জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয় স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদকে।

ফোন বন্ধ, অবস্থান অজানা

দেশজুড়ে মুরাদকে নিয়ে আলোচনা চললেও তার অবস্থান এখন কোথায়, তা তার সংশ্লিষ্ট কেউই বলতে পারছেন না। সে কারণে গণমাধ্যমেও সরাসরি তার কোনো বক্তব্য আসেনি।

তুমুল সমালোচনা শুরুর পর সোমবার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানেও যাননি মুরাদ। তখন থেকে সচিবালয়েও যাচ্ছেন না তিনি। বন্ধ রয়েছে তার মোবাইল নম্বর।

তবে সেদিন চট্টগ্রামের একটি পাঁচতারকা হোটেলে তিনি অবস্থান করেছিলেন বলে গণমাধ্যমের খবর এসেছে। তবে রাতেই তিনি ওই হোটেল ছাড়েন।

বাদ পড়ার পর মন্ত্রণালয় ও জেলা নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ নেই মুরাদের।

মঙ্গলবার মুরাদ পদত্যাগপত্র পাঠালে তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে। তবে তারা কিছু বলতে পারেননি।

বুধবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের (প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর) একজন কর্মকর্তা জানান, পদত্যাগের পর মুরাদ হাসান কোথায় আছেন, কীভাবে রয়েছেন সে খবর নেই তাদের কাছে।

কোথায় যোগাযোগ বা কথাবার্তা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেটাও জানি না। ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্টদের নম্বরও বন্ধ। আমিও চেষ্টা করেছিলাম; সব বন্ধ এখন।”

মুরাদ হাসানের খবর জানতে চাইলে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাকি বিল্লাহ বলেন, “উনি কোথায় আছে আমরা জানি না। বলতেও পারব না, যোগাযোগও নেই।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি বলেন, ফোন বন্ধ থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ নেই মুরাদের।