বুধবার এই কমিটির তিনটি (৫৫, ৫৬, ৫৭তম) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর তা হয়েছে দেড় ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি রুস্তম আলী ফরাজী এমন বৈঠকে সমস্যা না দেখলেও প্রশ্ন তুলেছেন কমিটির সদস্য সাবেক প্রধান হুইপ মো. আব্দুস শহীদ।
সরকারি হিসাব কমিটি সরকারের ব্যয় নির্বাহের জন্য সংসদ কর্তৃক মঞ্জুরিকৃত অর্থের উপযোজন হিসাব ও সরকারের বার্ষিক আর্থিক হিসাব পরীক্ষা করে। এ ছাড়া কমিটি সংসদে উপস্থাপিত অন্যান্য আর্থিক হিসাবও পরীক্ষা করে।
বৈঠকের বিষয়ে সংসদ সচিবালয় থেকে আগের দিন যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়, সেখানে একটি (৫৫তম) বৈঠকের কথা বলা হয়েছিল।
তবে সংসদ সচিবালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বুধবার বিকালে এক বসায় তিনটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কমিটির সভাপতি ফরাজীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য আব্দুস শহীদ, শহীদুজ্জামান সরকার, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ্ ও ওয়াসিকা আয়শা খান অংশ নেন।
বৈঠক শেষে সংসদ সবিচালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবারের সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন কোম্পানির অডিট আপত্তি নিয়ে আলোচনা হয়।
একাধিক সভার কাজ এক বৈঠকে সারার বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি রুস্তম আলী ফরাজী সাংবাদিকদের বলেন, “একবারে একাধিক বৈঠক করেছি, বিষয়টি তা নয়। মূল বৈঠক হিসেবে একটি নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করছি। আর দীর্ঘদিন অনেক বিষয় অনিষ্পন্ন ছিল, আমরা সেগুলো নিষ্পত্তি করেছি।
“এটা করতে সময় লাগে না। এক/দুই মিনিটে হয়ে যায়। এগুলো উপস্থাপন করেই আমরা নিষ্পত্তি করে দিই।”
এ বিষয়ে আব্দুস শহীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কমিটির বৈঠকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন সভাপতি। এক্ষেত্রে সদস্য হিসেবে আমাদের কিছু করণীয় নেই। এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময়ে তিনটি বৈঠক হলে তা কতটা ফলপ্রসূ হয় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যেন তেন করে আলোচনা করে লাভ কী?”
এ ধরনের বৈঠক বিধিসম্মত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শহীদ।
“কার্যপ্রণালী বিধিতে মাসে কমপক্ষে একটি বৈঠকের কথা বলা আছে। বেশি বৈঠক হলে কোনো সমস্যা নেই। আপনি চাইলে মাসের প্রতিদিনই বৈঠক করতে পারেন। কিন্তু একদিনে একাধিক বৈঠক বা একবার বসেই একাধিক বৈঠক শেষ করা এটা কি বিধিসম্মত?”
গত দশম সংসদেও সরকারি হিসাব কমিটিও এভাবে বৈঠক করেছিল। সাবেক মন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি পাঁচ বছরে ১০১টি বৈঠক করেছিল বলে সংসদ সচিবালয় থেকে জানা গেছে।
ওই সময় কখনও একদিনে একটি আবার কখনও এক বসায় দুটি করে বৈঠক হয় বলে সংশ্লিষ্ট কমিটি শাখার কর্মকর্তারা জানায়।
সংসদ সচিবালয়ের উপসচিব ও এই কমিটির সচিব ফয়সাল মোর্শেদ বলেন, “বাস্তবতা হচ্ছে, এই কমিটির কার্যক্রমকে অন্য কমিটির সাথে মেলানো যাবে না। অনেকগুলো বিষয় রয়েছে যেগুলো একটি মিটিং হিসেবে দেখানো হলে কার্যবিবরণী লেখা থেকে শুরু করে অনেক জটিলতা হয়। যার কারণে এটা করা হয়।”
“তাছাড়া বছরের পর বছর অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তিগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি দরকার,” বলেন তিনি।