‘বেহুদারা’ পাকিস্তানকে খেলাতে নিয়ে এসেছে: এমপি মোতাহারের ক্ষোভ

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় দেশের মাটিতে পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে খেলতে আনায় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2021, 05:28 PM
Updated : 25 Nov 2021, 05:28 PM

যারা এই খেলার আয়োজন করেছেন, তাদের ‘বেহুদা’ আখ্যায়িত করেছেন সাবেক এই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে লালমনিরহাটের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, “আমাদের মধ্য কিছু বেহুদা লোক আছে। আমি তাদের বেহুদাই বলব। স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন হচ্ছে, আর পাকিস্তান দলকে এনেছে এখানে ক্রিকেট খেলাতে। এগুলো দেখতে হবে।”

টি-টোয়েন্ট সিরিজ শেষে টেস্ট ম্যাচের জন্য বর্তমানে বাংলাদেশ সফরে রয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। টি-টোয়েন্ট সিরিজ বাংলাদেশ হেরেছে ৩-০ ব্যবধানে।

মোতাহার প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, “যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের যে দেশ পছন্দ, সেখানে পাঠিয়ে দিন।”

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে না পারায় নিজের কষ্টের কথা প্রকাশ করে এই সংসদ সদস্য বলেন, “করোনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেপারেশন এনে দিয়েছে। দেখা না হোক, ফোনে কথাতো বলতে পারি। সংসদ সদস্য, জেলার সভাপতি সাধারণ-সম্পাদকদের সাথে কথা বলতে পারেন।”

এর আগে সরকারি দলের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই কৃষকের ছেলে সচিবালয়ে সচিব হয়েছেন। সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছে বাঙালির সন্তান। দেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই মেজর জিয়া লেফটেনেন্ট জেনারেল হয়ে ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই দণ্ডিত হয়েও প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায় বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।”

সংসদের বৈঠকের প্রথম পর্বে বিএনপির রুমিন ফারহানার দেওয়া বক্তব্যের জবাব দেন ইকবালুর রহিম। তখন সংসদ কক্ষে রুমিন অনুপস্থিত ছিলেন।

ইকবালুর রহিম বলেন, “রুমিন ফারাহানা বক্তব্য দিয়ে জানজুয়ার মত পালিয়ে গেছেন। রুমিন বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের নরক। তিনি শীতাপত নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে বক্তব্য দিয়েছেন। তার বাসাও নিশ্চয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। পবিত্র কুরআনে নরকের বর্ণনা দেওয়া আছে, রুমিন ফারহানার চলাফেরা দেখে মনে হয় না তিনি নরকে বাস করছেন।

“তিনি উন্নয়নের সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন, আর বলছেন উন্নয়নের নরক। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই রুমিন বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে লন্ডনে গিয়ে বার-অ্যাট-ল করতে পেরেছেন। এটি তিনি অস্বীকার করতে পারেন না।”

দিনের প্রথম ভাগে বক্তৃতা দিতে দাঁড়িয়ে রুমিন ফারহানা বলেছিলেন, বর্তমানে দেশে  অর্থনৈতিক বৈষম্য ‘অকল্পনীয় পর্যায়ে’ পৌঁছে গেছে।

“আমি দেখি উন্নয়নের বিষে লাল বাংলাদেশ। মার্কিন সংস্থা মিলোনিয়ান চ্যালেঞ্জ করপোরেশন সুশাসন নিশ্চিত করতে চাওয়া দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। তারা বিভিন্ন অংকে অনুদান দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ এই ফান্ড পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাদের ১৬টি ক্ষেত্রে রেড জোনে আছে বাংলাদেশ। আগের বছরগুলোতে ছিল আরও কম। এখন পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে।”

এর জবাবে ইকবালুর রহিম বলেন, উন্নয়নের বিষে কীভাবে লাল হয় তা তিনি জানেন না।

“তবে কেউ যদি লাল পানি খায়, তাহলে তার চেহারা লাল হয়। পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্রো রেল, মাতারবাড়ি প্রকল্প-এসব লাল নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের বিস্ময়।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সংসদে সাধারণ আলোচনার জন্য প্রস্তাব তোলেন। এর আগে সংসদে স্মারক বক্তৃতা দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। দু্ইদিন আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি বৃহস্পতিবার গ্রহণ করা হয়।