স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির এই জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য বলেন, “স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা একটি আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ পেয়েছি। আর সেই প্রদীপ হল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”
বুধবার সংসদে সাধারণ আলোচনার জন্য প্রস্তাব তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সংসদে স্মারক বক্তৃতা দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। দু্ইদিন আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি বৃহস্পতিবার গ্রহণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে পঞ্চদশ অধিবেশনের বৈঠক শুরু হয়। দিনের কার্যসূচিতে সাধারণ প্রস্তাবের আলোচনাই হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফখরুল ইমাম বলেন, “আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পেছনের সব উদ্দেশ্য রাতারাতি পূরণ হয়ে যাবে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে দেশপ্রেম, সততা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালনা হলে অল্প সময়ের মধ্যে অর্জন করতে পারব।”
তিনি বলেন, “উন্নত দেশ হতে হলে, মানুষের উন্নতির ব্যবস্থার দরকার। এক জরিপে দেখা যায়, দেশের দুই কোটি ৩৪ লাখ মানুষ এখনো অনুন্নত ও অস্বাস্থ্যকর পায়খানা ব্যবহার করে। দেড় শতাংশ মানুষ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে।”
সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে কিছু বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করেন ফখরুল ইমাম।
তিনি বলেন, “লোহার হাতে দুর্নীতির লাগাম ধরতে হবে। জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার কমানো, বেকারত্বের সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চাপ মোকাবেলা করা। রোহিঙ্গা প্রত্যাবার্সনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো, উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা মোকাবেলা করা, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনা, গণতান্ত্রিক চাকা অব্যাহত রাখা, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া…।”
জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, “স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক কিছুই অর্জন করতে পারিনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেসব অর্জনের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
“তবে ৫০ বছরে আমরা যে অর্জন করেছি তা তুচ্ছ নয়। অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে।”
আওয়ামী লীগের শাজাহান খান বলেন, “পাকিস্তানিরা আজও ক্ষমা চায়নি। রাজাকার, আল বদররা আজও ক্ষমা চায়নি। সেই জামায়াত জিয়াউর রহমান আর খালেদা জিয়ার বদান্যতায় এখনো রাজনীতি করে।
“আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। নিজস্ব টাকায় পদ্মাসেতু করছি। মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ চলছে। যারা সর্বদা চক্রান্ত করছে, সেই বিএনপি-জামায়াত, যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কি না ষড়যন্ত্র করেছে। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। জয়বাংলা স্লোগান বাদ দিয়ে পাকিস্তানি ভাবধারার স্লোগান ফিরিয়ে এনেছিল।”
বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “জনগণের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। বিএনপির-জামায়াতের বিরুদ্ধে আজীবন লড়তে হবে। আমাদের সবাইকে সোনার বাংলার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই আমাদের একমাত্র সম্পদ। যা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।”