গাজীপুরের জাহাঙ্গীরের বিষয়ে ‘সিদ্ধান্ত আসছে’

মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের নিয়ে একটি মন্তব্যের অডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বিষয়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2021, 12:15 PM
Updated : 18 Nov 2021, 12:15 PM

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, শুক্রবারের কার্যনির্বাহী সভায় জাহাঙ্গীরের বিষয়ে ‘সিদ্ধান্ত আসতে পারে’।

দলীয় ‘স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ড ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে এর আগে জাহাঙ্গীরকে নোটিস দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছিল।

মাস খানেক আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই অডিওতে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং বঙ্গবন্ধু ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করতে শোনা যায়। বলা হচ্ছে অডিওতে ওই মন্তব্য জাহাঙ্গীর আলম সরকারের।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জাহাঙ্গীর গত অক্টোবরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “একটি মহল আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে একটি এডিটেড ভিডিও বের করেছে, যা সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, এমনকি কিছু গণমাধ্যমও প্রকাশ করেছে।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আগামীকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে এবং চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়েও আলোচনা হবে।

"ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যারা বিদ্রোহ করছে এবং বিদ্রোহীদের মদদ দিচ্ছে, তাদের ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য।"

বুধবার টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর সমাধিস্থলে নবগঠিত দল বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাকে ‘দুঃখজনক ও নিন্দনীয়’ হিসেবে বর্ণন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। 

তিনি বলেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে, এ হামলার ব্যাপারে তদন্ত চলছে।"

গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া এবং সদস্য সচিব নুরুল হক নূরসহ নেতাকর্মীরা বুধবার টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন। ওই হামলার জন্য তারা আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগকে দায়ী করছেন। 

সরকার গণতন্ত্রকে ‘বিলীন করে ফেলছে’ বলে যে অভিযোগ বিএনপি নেতারা করছেন, সে প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি নেতাদের কাছে প্রশ্ন, গণতন্ত্রের বিকাশ এবং গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে আপনারা কোনো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন?

“গণতন্ত্রের সম্মুখ যাত্রায় পদে পদে যারা বাধা তৈরি করে, তারাই আবার মায়াকান্না কাঁদছে। গণতন্ত্রের নামে যারা নির্বাচন বিমুখ, যারা জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী নয়, যারা ক্ষমতায় থাকাকালে ভোটারবিহীন নির্বাচন করে এবং সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করে, তারাই আবার গণতন্ত্রের কথা বলে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি মহাসচিবের কাছে জানতে চান, “জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে কেন আপনি সংসদে গেলেন না?  জনমতকে অসম্মান কে দেখাল? সরকার না আপনারা?

“বিএনপি নিশ্চিত হয়েছে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, সেজন্য তারা দেশের স্থিতিশীল নষ্ট করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। বিএনপি উসকানি দিয়ে নানা ঘটনা ঘটিয়ে সরকারের উপর দায় চাপাতে চায়। সাম্প্রতিক কালে প্রতিটি অঘটনের সাথে বিএনপি এবং তার সাম্প্রদায়িক দোসররা জড়িত।”

বিএনপির রাজনীতি ‘অস্থিরতায় পূর্ণ’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এ অস্থিরতা ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার অস্থিরতা, এ অস্থিরতার কারণে বিএনপি ক্রমশ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।”