ইউপিতে ভোট: সহিংসতা রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ চান সিইসি

ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে চলমান সহিংসতায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2021, 04:57 PM
Updated : 15 Nov 2021, 05:08 PM

সোমবার দ্বিতীয় ধাপের ভোট পরবর্তী ব্রিফিংয়ে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

এখন পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই ধাপের ভোট শেষ হয়েছে। ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে এক হাজার ৭ ইউপি ও ২৩ ডিসেম্বর ৮৪০ ইউপির ভোট রয়েছে।

ডিসেম্বরের মধ্যে চতুর্থ ধাপে প্রায় সহস্র ইউপির ভোট করতে তফসিল দেওয়া হবে বলে জানান সিইসি।

ইতোমধ্যে নরসিংদী, মাগুরাসহ কিছু নির্বাচনী এলাকায় সহিংসতায় তথ্য তুলে ধরে কে এম নূরুল হুদা জানান, নির্বাচনকে ঘিরে কয়েকটি স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এটা প্রত্যাশিত নয়। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এসবের পেছনে ছিল আধিপত্য বিস্তার, বংশীয় প্রভাব ও ব্যক্তিগত শত্রুতা।

“ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দিয়েছি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং করেছি। যেসব বিভাগে বেশি নির্বাচন আছে, সেখানে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের মোটিভেট করার চেষ্টা করা হবে।”

তার দাবি সহিংসতার এ চিত্র সারাদেশের চিত্র নয়। সবখানে ভোটের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে।

সিইসি জানান, এসব প্রাণহানির ঘটনার সবগুলো নির্বাচনী সংঘর্ষের কারণে হয়েছে কি না তা অনুসন্ধানের দাবি রাখে। এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি ঘটনা ভোটকেন্দ্রে বা ভোটের দিন ঘটেছে।

“কোনো ঘটনা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই ঘটেছে আবার কোনোটা রাতের আধারে ঘটেছে।“

সহিংসতায় জনমনে ভীতি, নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে চিঠি

সোমবার ‘ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে গৃহীত কার্যক্রম অবহিতকরণ’ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে হতাহত হওয়া এবং ক্রমশ তা বৃদ্ধি পাওয়ার খবর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।

তাছাড়া নির্বাচনের দিন, আগে ও পরে দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শনের মহড়া, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার, সন্ত্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি ইত্যাদি সম্পর্কেও বিভিন্ন মিডিয়ায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকশিত হচ্ছে।

এসব সংবাদ ও প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে জনমনে ভীতির সঞ্চার হচ্ছে এবং সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশের উপর প্রভাব পড়ছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করে ইসি সচিবালয়।

“দেশীয় অস্ত্রের মহড়া, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার কঠোরভাবে দমন তথা নির্বাচনকালীন সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কমিশন বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছে। এ লক্ষ্যে স্থানীয় পুলিশ অদ্যাবধি কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা কমিশনকে অবহিত করার জন্যও সিদ্ধান্ত দিয়েছে,” বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধি মানার অনুরোধ

বিফ্রিংয়ে সিইসি জানান, সবগুলো নির্বাচন সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য মাঠ পর্যায়ের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থী, তাদের সমর্থক ও সর্বোপরি সব রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তারা যেন সবাই আচরণবিধি মেনে চলেন, সহনশীল আচরণ করেন।

“এসব ব্যাপারে নির্বাচনী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করছি।”

ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের প্রবণতা বেশি হওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “তাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করিনি। কিন্তু আমরা বার্তা দিয়েছি। তারা জানে আমাদের উৎকণ্ঠা আছে। তাদের বলা হয়েছে, যেন বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে রাখে।”

নির্বাচন ভবনে ইসির বিফ্রিংয়ের সময় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।