দেশের ‘ভাবমূর্তি নষ্ট করতে’ এসব ঘটাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দিকে ইংগিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের ভাবমূর্তি ‘নষ্ট করতে ইচ্ছা করেই’ এসব ঘটানো হচ্ছে এবং অপ্রচার চালানো হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2021, 09:22 AM
Updated : 24 Oct 2021, 09:22 AM

রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের লেবুখালীতে পায়রা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশকে আর কখনো কেউ পেছনে টানতে পারবে না। কিছু কিছু ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটছে, ঘটানো হচ্ছে। ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হচ্ছে, সেটা আপনারা নিজেরাই টের পান। যাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।”

সেই সাথে ‘অপপ্রচারও’ চালানো হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা যতই উন্নতি করি, ভালো কাজ করি, একটা শ্রেণিই আছে বাংলাদেশের বদনাম করতে তারা ব্যস্ত।

“তারা কী চায়? এদেশে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক সেটা তারা চায় না। একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হলে তাদের একটু কদর বাড়ে, সেই জন্য তাদের একটা… সব সময়.. তারা এই উন্নয়নটা দেখে না। বরং ধ্বংসই তারা করতে চায়।”

এ বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাংচুর চালানো হয়।

এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয় হিন্দুদের উপাসনালয়, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এসব ঘটনায় ২০ হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করে শতাধিক মামলা হয়েছে ইতোমধ্যে। সেসব মামলায় প্রায় ছয়শ আসামিকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এদিন ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-তামাবিল মহাসড়ক ছয় লেইনে উন্নীতকরণ প্রকল্পেরও ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।  

তিনি বলেন, “এক সময় অনেকেই বলত, দেশ স্বাধীন হয়ে কি হবে, বা দেশ বোধহয় এগিয়ে যাবে না। কিছু মানুষের এমন মনোভাবের কথা তুলে ধরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর যারা অবৈধভাবে সরকারে এসেছে, তারা দেশের উন্নয়নকে থামাতে চেয়েছে।

“বাংলাদেশ বিশ্বে একটা মর্যাদা পাবে, বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বে যে মাথা উঁচু করে চলতে পারবে- এটাই যেন তাদের কাম্য ছিল না, এটাই যেন তারা চাইতো না।

আর সে কারণে বিদেশে ‘ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা আর দুর্ভিক্ষের দেশ’ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিতি পেয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “২০০৮ এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আমরা সরকার গঠন করি। এখন পর্যন্ত দীর্ঘ সময় থাকার ফলে আজকের বাংলাদেশকে আর কেউ হেয় করে দেখতে পারে না। আজকে বাংলাদেশের নাম বললে সবাই সম্মান করে এবং বাংলাদেশ আজকে সারাবিশ্বে একটা মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।”

দেশকে গড়ে তুলতে যারা এই সময়ে নিরলস পরিশ্রম করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান সরকার প্রধান।      

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুর কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় অনুষ্ঠানের গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন।