মন্দিরে হামলা: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রশ্ন

দেশের বিভিন্ন এলাকায় মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2021, 08:12 AM
Updated : 17 Oct 2021, 08:12 AM

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

“প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশ সত্বেও তাদের নিশ্চেষ্ট ভূমিকা প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে সেই সর্ষে দিয়ে ভূত তাড়ানো যায় না।”

এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমীর দিন বুধবার কুমিল্লার একটি মন্দিরে ‘কোরআন অবমাননার’ কথিত অভিযোগের ছবি-ভিডিও ফেইসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরপর কয়েকটি মন্দির ও মণ্ডপে হামলা হয়, যা থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে।

পরে চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, মৌলভীবাজার, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে।

দুদিন পর শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল করে কয়েকশ লোক পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। চট্টগ্রামেও একই সময়ে একটি পূজা মণ্ডপে হামলা হয়।

একই দিনে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতির মধ্যে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে কয়েকটি পূজামণ্ডপ এবং হিন্দুদের বাড়িঘরে দফায় দফায় হামলা-ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

সেদিন ‘হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে’ একজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল নোয়াখালীর পুলিশ। পরদিন একটি পুকুর থেকে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বলছে, এবার দুর্গাপূজায় দেশের বিভিন্ন স্থানে তিন দিনে ৭০টি পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এর প্রতিবাদে আগামী ২৩ অক্টোবর ঐক্য পরিষদের ডাকা ছয় ঘণ্টার অনশন ও গণঅবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি।

বিবৃতিতে বলা হয়, “এ ধরনের অন্যায় ও অপরাধমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি ও রাজনৈতিক সমাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সকল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী, সামাজিক সংগঠন, নাগরিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে কাজ করতে আহবান জানিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো।”

ওয়ার্কার্স পার্টি বলছে, ধারাবাহিকভাবে এসব সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে ‘বিচ্ছিন্ন বিষয়’ বলা যায় না। ‘খুবই পরিকল্পিতভাবে’ এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে এবং এখনও অব্যাহত রয়েছে।

ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলকে ‘দোষারোপের রাজনীতি’ ছেড়ে এই সাম্প্রদায়িক ঘটনাবলির ‘পেছনের ষড়যন্ত্রের প্রকৃত শক্তিকে’ চিহ্নিত করা এবং দলমত না দেখে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার আহবান জানানো হয় ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে।

আরও পড়ুন: