সমালোচনার পর নাসিরনগরে নৌকার ইউপি প্রার্থী বদল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দির ও হিন্দু পল্লীতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলার আসামিদের ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী করার পর সমালোচনার মুখে দুজনকে পরিবর্তন করেছে আওয়ামী লীগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2021, 01:18 PM
Updated : 14 Oct 2021, 07:16 PM

নাসিরনগর সদর ইউনিয়নে আবুল হাসেমের পরিবর্তে সাবেক ইউপি সদস্য পুতুল রানী বিশ্বাস এবং হরিপুর ইউনিয়নে দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির পরিবর্তে মো. ওয়াসিম আহমেদকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই দুই ইউনিয়নে প্রার্থী পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আসন্ন ভোটে অংশ নিতে গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ নাসিরনগর উপজেলার ১৩ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে।

তাতে ২০১৬ সালে হিন্দুদের উপর হামলার মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের নাম দেখে ব্যাপক সমালোচনা উঠেছিল।

তার পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের বুধবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যেখানে যেখানে অভিযোগ রয়েছে, সেখানে প্রার্থী পরিবর্তন করা হবে।

দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি (বাঁমে) ও আবুল হাসেম।

২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর ফেইসবুকে গুজব রটিয়ে নাসিরনগরে হামলা চালিয়ে মন্দির ও হিন্দু পল্লীতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

ওই ঘটনায় নাসিরনগর গৌরমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরের বছর ১০ ডিসেম্বর ২২৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

ওই আসামিদের মধ্যে রয়েছেন নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক আবুল হাসেম এবং হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি।

তারা দুজনই তখন গ্রেপ্তার হয়ে কিছুদিন কারাগারে থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন।

কেন এমন প্রার্থী, প্রশ্ন তৃণমূলেও

হাসেম ও আতিকুরকে দলীয় প্রার্থী করা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগ নেতাদের মনেও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রাফিউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তৃণমূল পর্যায় থেকে নাম পেয়ে কাউন্সিলর ডেলিগেটদের উপস্থিতিতে বর্ধিত সভার মাধ্যমে মনোনয়নের জন্যে পাঁচটি করে নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারও উপস্থিত ছিলেন।”

আল মামুন সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই দুজন যে অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি, তা উল্লেখ করেই মূল্যায়ন প্রতিবেদন কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন তারা।

তিনি বলেন, “তারা মন্দিরে ভাংচুর মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি, তা উল্লেখ করেই আমরা মূল্যায়ন প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলাম।

“তারা মনোনয়ন পাওয়ার পর বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডকে অবহিতও করা হয়।”

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকায় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে।

তিনি তখন বলেন, “অভিযুক্ত হলেই যে ঘটনা সত্য, সেটি বলা যায় না।”

তবে তারপরই ওই দুই ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী পরিবর্তনের খবর আসে।