হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য জানানোর সময় মঙ্গলবার এক আলোচনাসভায় তিনি বিষয়ে কথা বলেন।
অসুস্থ বোধ করায় মঙ্গলবার বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে ভর্তি করে নেন চিকিৎসকরা।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা জেনেছেন দেশনেত্রী হাসপাতালে। তিনি অসুস্থ। কেন হাসপাতালে? যে তিন বছর তিনি জেলে ছিলেন তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমি বলছি, তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। ইচ্ছা করে তার চিকিৎসা করেনি।
“চিকিৎসকরা বার বার করে বলেছেন, তার (খালেদা জিয়া)যে অসুস্থতাগুলো আছে,যে রোগগুলো আছে, সেই রোগগুলোর চিকিৎসা এখানে (দেশে) পূর্ণাঙ্গভাবে সম্ভব নয়।”
সব রোগের একসঙ্গে চিকিৎসা করা যায়- এমন ‘মানসম্পন্ন’ হাসপাতালে খালেদাকে নেওয়া দরকার মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “কেন দিচ্ছেন না বেগম খালেদা জিয়ার প্রাপ্য জামিন তাকে? বেগম জিয়া তো দয়া চাচ্ছেন না আপনাদের কাছে। আপনারা তার যে প্রাপ্য জামিন সেটা দেন। এই ধরনের মামলায় সবাইকে তো জামিন দিয়েছেন আপনারা। একজনও বাইরে নেই্, আমি জানি। তাহলে তাকে জামিন দিচ্ছেন না কেন?”
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়েছিল তার পরিবার। তবে সরকার বলেছে, সাময়িক মুক্তির শর্ত অনুযায়ী তাকে দেশে রেখেই চিকিৎসা দিতে হবে।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, “আপনারা (সরকার) তাকে জেলে রেখেছেন এই কারণে যে, আপনারা জানেন যে,দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যদি বের হন তাহলে আপনাদের তখতে তাউস থাকবে না।”
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, “কয়েকদিন ধরে তার অল্প অল্প জ্বর আসছিল... চিকিৎসকরা দেখেছেন যে, যেহেতেু সেই হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর তার আর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়নি,টেস্ট হয়নি, সুতরাং তাকে হাসপাতালে নিয়ে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করে ট্রিটমেন্টের তারা ব্যবস্থা নিতে চান।”
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস,ডায়াবেটিস ও চোখের সমস্যায় ভুগছেন। গুলশানের বাসা ফিরোজায় অবস্থানের সময় গত এপ্রিলে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।
কোভিডোত্তর জটিলতায় ২৭ এপ্রিল খালেদাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। প্রায় দুই মাস সিসিইউতে ছিলেন। পরে ১৯ জুন মেডিকেল বোর্ড বাসায় নিয়ে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে ছাড়পত্র দেয়।
সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বিএনপির প্রয়াত নেতা অ্যাডভোকেট আফসার আহমদ সিদ্দিকীর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আফসার আহমদ সিদ্দিকী স্মৃতি ফাউন্ডেশন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আফসার আহমদ যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান ও যশোর-৫ আসন থেকে দুই বার সাংসদ ছিলেন। ২০০১ সালের ১২ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
ফাউন্ডেশনের আহবায়ক প্রয়াত নেতার সহধর্মিনী জাহানারা সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সদস্য জামিল আহমদ সিদ্দীকীর সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, শামসুজ্জামান, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত,সহশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: